মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে নেমেছের চার প্রার্থী। এসব প্রার্থীদের সবাই পেশায় ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোয়েব আহমদ। শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর।

 


এছাড়া শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা সদ্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা চলমান রয়েছে। আর তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসান শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

 

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, পেশায় ঠিকাদার সোয়েব আহমদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তাঁর ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা মূল্যের ২ একর ৩৩.২৪ শতাংশ কৃষি জমি থাকলেও তা থেকে বছরে কোনো আয় নেই। ৬২ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ ভূমির উপর বাণিজ্যিক দালান রয়েছে। ব্যবসা থেকে বছরে আয় ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৩১৫ টাকা। ব্যাংকে শেয়ার-সঞ্চয়পত্র আমানত রয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সম্মানী ভাতা থেকে বছরে আয় ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তাঁর হাতে নগদ ১ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা ১ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৬ টাকা। রয়েছে ১৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের জীপ গাড়ি। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ তোলা স্বর্ণালংকার। ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার একনলা শর্টগান ও ২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী (অর্জনকালীন) রয়েছে। যৌথ মালিকানায় একতলা ১টি পাকা বাড়ি রয়েছে। ঠিকাদারি কার্যাদেশের উপর ব্যাংক দেনা ৩৭ লাখ ৯৯৬ টাকা ও এফডিআরের বিপরীতে ব্যাংক লোন ৫১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৬ টাকা, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান পাখিয়ালা করাতকলের বিপরীতে লোন ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকা এবং মাহাদী ট্রেডার্সের নামে লোন ২৫ লাখ ৫ হাজার ৩৯৯ টাকা। 

 

অন্যদিকে এমএসএস পাশ রফিকুল ইসলাম সুন্দরের পেশা ব্যবসা। তাঁর অর্জনকালীন ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ৯৯ শতাংশ কৃষি জমি আছে। স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার ৩৭ শতাংশ কৃষি জমি রয়েছে। ২৫ লাখ টাকার বসতবাড়ি রয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫ লাখ টাকা ব্যাংক লোন। কৃষিখাতে বছরে আয় ৭৫ হাজার, ব্যবসা খাতে ৩ লাখ ৫১ হাজার, নগদ টাকা সাড়ে ৫ লাখ, স্ত্রীর কাছে ১ লাখ ২৫ হাজার, ব্যাংকে জমা ব্যবসার ৭ লাখ ২০ হাজার ও মূলধন ১ লাখ ৫৫ হাজার। স্ত্রীর নামে ১ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ১ লাখ টাকার ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্র। 

 

অষ্টম শ্রেণি পাশ ব্যবসায়ী আজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। কৃষি খাতে তাঁর আয় বছরে ৫০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। হাতে নগদ ২ লাখ টাকা। স্ত্রীর কাছে ২০ হাজার। ব্যাংকে জমা ২০ হাজার। ৫০ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী। ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র। নিজের নামে ৫৩ শতাংশ কৃষি জমি অর্জনকালীন মূল্য ৭ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার ৩০ শতাংশ। আছে যৌথ পৈত্রিক ১৫ একর সম্পত্তির একটি বাড়ি। ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে সম্মানী ভাতা থেকে আয় করেছেন ৫৪ হাজার টাকা।

 

মাসুম আহমদ হাসান বিএ পাশ। ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় ৩ লাখ টাকা। নগদ টাকা ১ লাখ, স্ত্রীর কাছে ১০ হাজার। ব্যাংকে জমা ১ হাজার। ১২ লাখ টাকার একটি জীপ। স্ত্রীর ৭ তোলা স্বর্ণ। দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র। নিজের নামে ১৫ লাখ টাকার ১ একর কৃষি জমি। একটি পৈত্রিক বাড়ি। নেই কোনো মামলা এবং ব্যাংক লোন।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / মাহি