সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে ৫নং ফতেপুর ইউনিয়ন (হরিপুর) পরিষদে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 

শনিবার (০৪ মে) বিকাল ৪টায় ৫নং ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউ/পি সদস্য ইলিয়াস আলী সাজু'র পরিচালনায় ও চেয়ারম্যান রফিক আহমেদ'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালিক রুমাইয়া।
 


এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন- জৈন্তাপুর মডেল থানার এসআই (সাব-ইন্সপেক্টর) মো: সাহিদ মিয়া, হরিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আলহাজ্ব আলাউদ্দিন, ইউ/পি সদস্য আব্দুর রকিব, রফিক আহমেদ, আব্দুল মতিন, আব্দুল মুতলিব, মতিউর রহমান, নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী কুতুবউদ্দিন শিকদার, জাকারিয়া মাহমুদ, আজিজুর রহমান, আব্দুল খালিক মহালদার, সাইফুল আলম মতি, রমজান রূপজান বাগেরখাল একাডেমির প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ইউ/পি সদস্য আব্দুল মতিনসহ এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
 

গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি জনিত কারণে ভবিষ্যতের নির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিধায় একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে জাতীয় সংসদ টেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ প্রণয়ন করেছে। প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’।
 

সভায় জানানো হয় যে, ১৮ বৎসর বা তদূর্ধ ওতে পঞ্চাশ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশী তবে বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণ স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকগণ যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তারা পাসপোর্ট এর ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশনের পর ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা প্রদান করে পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। প্রাপ্তির ক্ষেত্রে চাঁদাদাতাকে কোন অফিসে আবেদন করতে হবে না। নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করলে ৬০ বছর পূর্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএফটি এর মাধ্যমে তার ব্যাংক একাউন্টে মাসিক পেনশন টাকা জমা হবে। এছাড়াও নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিবাহের ব্যয় নির্বাহী জন্য তা ইচ্ছা করলে পেনশন ফান্ডে শুধু তার জমাকৃত অর্থে ৫০% ঋণ হিসেবে উত্তোলন করতে পারবেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্যকৃত ফি সহ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে এবং সমুদয় অর্থ চাঁদাদাতার হিসেবে জমা হবে। সকল স্কিমের জন্য চাঁদার কিস্তি চাঁদা প্রধানকারীর পছন্দ মাফিক মাসিক, ত্রৈমাসিক বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতাগন ইচ্ছা করলে অগ্রিম হিসেবে চাঁদার টাকা পেনশন ফান্ডে জমা করতে পারবেন। চাঁদাদাতা পেনশনে থাকাকালীন তার বয়স ৭৫ বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনের নমিনি বা নমিনীগণ বা বৈধ উত্তরাধিকার গণ অবশিষ্ট সময়ের জন্য উক্ত পেনশন প্রাপ্ত হবেন।

সরকারের এই মহতী উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছেন সব শ্রেণি-পেশার অংশগ্রহণকারীরা। চাঁদা দাতারা অনলাইন প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করে যে কোনো একটি পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন।


প্রসঙ্গত, ৪টি স্কিমের মধ্যে সমতা স্কিমে (দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীদের জন্য) মাসিক এক হাজার টাকা চাঁদার মধ্যে চাঁদা দাতা দেবেন ৫শ টাকা এবং সরকার দেবে ৫শ টাকা। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর মাসিক পেনশন পাবে এক হাজার ৫৩০ টাকা।

সুরক্ষা স্কিমে (স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি) মাসিক এক হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা বিভিন্ন মেয়াদে জমা দেওয়া যাবে। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর মাসিক পেনশন পাবে এক হাজার টাকায় এক হাজার ৫৩০ টাকা, ২ হাজার টাকায় ৩ হাজার ৬০ টাকা, ৩ হাজার টাকায় ৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং ৫ হাজার টাকায় ৭ হাজার ৬৫১ টাকা।

প্রগতি স্কিমে (বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক) মাসিক ন্যূনতম ২ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা জমা দেওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার অর্ধেক কর্মী এবং অর্ধেক টাকা প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান এই স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর মাসিক পেনশন পাবে ২ হাজার টাকায় ৩ হাজার ৬০ টাকা, ৩ হাজার টাকায় ৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং ৫ হাজার টাকায় ৭ হাজার ৬৫১ টাকা।
 

প্রবাস স্কিমে (বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী বাংলাদেশি নাগরিক) মাসিক ৫ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার ও ১০ হাজার টাকা চাঁদা বিভিন্ন মেয়াদে জমা দিতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর মাসিক পেনশন পাবে ৫ হাজার টাকায় ৭ হাজার ৬৫১ টাকা, সাড়ে ৭ হাজার টাকায় ১১ হাজার ৪৭৭ টাকা এবং ১০ হাজার টাকায় ১৫ হাজার ৩০২ টাকা।


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/আব্দুল্লাহ/এসডি-১৯৫৯