থালায় নিজ হাতে ভাত বেড়ে রাতের খাবার ছেলেকে খাওয়াতে চেয়েছিলেন মা সফিনা খাতুন। এজন্য আগেভাগে রান্নাও করেছিলেন তিনি। রান্না সেরে ছেলে খাবার টেবিলে বসিয়ে পাশেই ছিলেন মা। এসময় এক বন্ধুর জন্মদিনের কেকে কাটতে ডাক আসে অন্য বন্ধুদের। মায়ের শত বারণ সত্তেও বন্ধুদের ডাকে বাসা থেকে বের হয়ে পড়েন ১৭ বছরের কিশোর মো. আলী। কথা ছিলো ১০ মিনিটের ভেতরেই ফিরবেন বাসায়। কিন্তু আর ফিরেননি তিনি। বন্ধুদের ডাকে পাতের বাড়া ভাত রেখে উঠে গিয়ে বন্ধুদের হাতেই প্রাণ গেল তার।


গত শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর ছাড়ারপাড় এলাকায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় আলীকে। নিহত আলী (১৭) কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের নুর আলীর ছেলে। পরিবারের সঙ্গে সে সিলেট মহানগরের ছড়ারপাড় এলাকার রাহাত মিয়ার কলোনিতে বসবাস করতো।



আলী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বামী নুর আলী ও পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের সংসার সফিনা খাতুনের সংসার। অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া কারাতে পারেনি ছেলে-মেয়েদের।


এদিকে খুনের ঘটনায় আজ শনিবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা হয়েছে। নিহত মো. আলীর মা সফিনা খাতুন বাদি হয়ে ১১ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামী করে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।


সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন সিপন এ তথ্য জানিয়েছেন।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় জন্মদিনের কেক কাটার কথা বলে কয়েকজন বন্ধু মো. আলীকে চালিবন্দরের পার্শ্ববর্তী মাছিমপুর ডেকে নেয়। সেখানে যাওয়ার পর তার উপর হামলা চালানো হয়। এসময় মো. আলী দৌঁড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায়। চালিবন্দর ভৈরব মন্দির সংলগ্ন এলাকায় আসার পর সে পড়ে গেলে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / মাহি/ নোমান