ছবি : এস কৌশিক সিংহ বিজয়

সিলেট মহানগরের ছড়া-খাল আর সুরমা নদীর পাড় যেন ময়লা ময়লার ফেলার সহজ ও আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিকের বোতল ও পলিথিনের ব্যাগসহ বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায় ছেয়ে গেছে মহানগরের প্রায় সবকটি ছড়া ও খাল। সম্প্রতি সিসিক মহানগরের বিশ কিছু ড্রেন ও ছড়া পরিষ্কারের কাজ শুরু করলেও অনেক ছড়া-খালে এখনো রয়েগেছে ময়লার স্তূপ। একই অবস্থা সুরমা নদীর বেশ কয়েক এলাকর পাড়। এতে পানিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, একটি সাথে বর্ষায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।



জানা যায়, সিলেট নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ টনেরও বেশি বর্জ্য উৎপাদন হয়। এসব বর্জ্য নিয়ে ফেলা হয় প্রায় ১৫ একর আয়তনের দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রীতিমত হিমসিম খেতে হয় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পরিচ্ছন্নতা শাখার। তার উপর নগরবাসীর অসেচতনতার কারণে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে নগরীর ছড়া ও খালগুলো। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা সংগ্রহসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ নগরবাসীকে যত্রতত্র ময়লা ফেলতে রুখতে না পেরে হতাশ সিসিকের পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তারা।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, সিটি কর্তৃপক্ষ সারা বছরই ছড়া-খালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়। মাহনগরের ছড়া-খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু মানুষজন ছড়া-খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করার ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে না। এ কারণে কদিন পরই ছড়া-খালে ময়লার স্তূপ তৈরি হচ্ছে। আর এতে নোংরা হচ্ছে পরিবেশ, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকাজুড়ে। এ ছাড়া নগরীর প্রত্যেক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন রয়েছে। কিন্তু অনেকে মাত্র ৫০-১০০ টাকা বাঁচানোর আশায় ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিনে ময়লা না দিয়ে ছড়ায় ফেলেন। ছড়ার পারের বাসিন্দারাই এসব আবর্জনা সরাসরি ফেলছেন বলে অভিযোগ।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ একলিম আবদীন সিলেটভিউকে জানান, যত্রতত্র ময়লা না ফেলার জন্য আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন এলাকায় নোটিশ দিয়েছি। যেখানে যত্রতত্র ময়লা ফেলা হলে জরিমানার কথাও বলা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মহানগরবাসীর সচেতনতার অভাব রয়েছে। এর ফলে লোকজন বিশেষ করে যারা ছড়ার পারে বসবাস করেন তারা আবর্জনা সরাসরি ছড়ায় ফেলে দেন। এ ছাড়া পুরো নগরীকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার সক্ষমতারও সীমাবদ্ধতা আছে। পুরো নগরী এখনও আমরা ডাস্টবিন এবং ময়লার ভ্যানের আওতায় আনতে পারিনি। সিসিকের পক্ষ থেকে নতুন করে আরও ১ হাজার ডাস্টবিন এবং ৫০০ ময়লা বহনের ভ্যানকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। ছড়া-খাল আর নদীর পাড় বর্জ্য ফেলার বিষয়ে আমরা কঠোর হতে যাচ্ছি। প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।



সিলেটভিউ২৪ডটকম / নাজাত