সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও গত ৮ মে অনুষ্টিত গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতিকের প্রার্থী শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, রক্তচক্ষু দেখাবেন না। আমি এসব ভয় করিনা। আর আমার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করে লাভ হবেনা। কারণ, কিভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয় তা আমার জানা আছে। ষড়যন্ত্রের মধ্যেই আমার জন্ম। ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে করতেই আমি এ পর্যায়ে এসেছি।
 

তিনি সম্প্রতি গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সদর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে অনুষ্টিত নির্বাচন পরবর্তী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে স্ত্রীসহ আমার উপর হামলা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা  আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। অনেকে এটাকে নাটক বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছেন। তৎক্ষনাৎ খবর পেয়ে ঘোড়া প্রতিকের কর্মী-সমর্থকরা সেখানে উপস্থিত হলে আমি পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের শান্ত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। অনেকে তাৎক্ষনিক কঠোর প্রতিবাদ করতে চাইলেও আমি বলেছিলাম, এটা নির্বাচন বানচালের একটা অপকৌশল। আমাদের নির্বাচনের দিন বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
 

তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন হিলালপুর বরায়া কেন্দ্র থেকে আমার অ্যাজেন্টকে বের করে দিয়ে প্রশাসনের সহায়তায় একজন শিক্ষক দরজা বন্ধ করে দোয়াত- কলমে ভোট দিয়েছেন। শুধু এই কেন্দ্রই নয়,  অন্যান্য কেন্দ্র থেকেও আমার অ্যাজেন্টদের বের করে দিয়ে দোয়াত-কলমে সিল মারা হয়েছে। আমার অ্যাজেন্টদের মারধর করা হয়েছে। এমনকি, কোনো কর্মীকে হাত পা ও চোখ বেঁধে বন্দী করে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে।
 

তিনি বলেন, কায়স্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমিসহ আনারস প্রতিকের প্রার্থীর উপর দোয়াত-কলমের সমর্থক সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় যা আপনারা বিভিন্ন চ্যানেলে লাইভে দেখেছেন। তাছাড়া ভাদেশ্বরের একটি কেন্দ্রে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের হামলায় আহত কয়েকজন এখনো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
 

জাবেদ দোয়াত-কলম প্রতিকের বিজয়ী প্রার্থী এলিম চৌধুরীর উদ্দেশ্যে ইঙ্গিতে বলেন, আপনি কিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আর কিভাবে ৮ মে নির্বাচন হয়েছে গোলাপগঞ্জের সচেতন মানুষ তা খুব ভালো করেই জানেন। তারা শান্ত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। তার মানে এই নয় যে, আপনি একেরপর এক সন্ত্রাসী ও  কালোবাজারির টাকা দিয়ে মানুষের মন জয় করে ফেলেছেন। ভোট কিনে বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে  চেয়ারে বসা গেলেও মানুষের মন জয় করা যায়না। আপনিও তা পারেন নি, কোনোদিন পারবেনওনা।

গোলাপগঞ্জ উপজেলাবাসীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আমার প্রতি যে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি জানি, সন্ত্রাস আর কালোটাকার ছড়াছড়ি এবং জাল ভোটের মহোৎসব না হলে জয় আপনাদের ভালোবাসার ঘোড়া প্রতিকের-ই হতো। তবে, আজ হোক কাল হোক, একদিন প্রকৃত সত্যের জয় হবে ইনশাল্লাহ।
 

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজসেবক সমছুল আলম সমছু।

সাবুল আহমদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ মজনু, লক্ষিপাশা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম নান্টু, বাঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মখছুছুর রহমান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক  মনসুর চৌধুরী, তাতীলীগ  উপজেলা সভাপতি আবুল মনসুর চৌধুরী সুমন, যুবলীগ নেতা অলিউর রহমান অলি, নাজিম উদ্দিন কালা,  মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা সম্রাট শাহজাহান প্রমুখ।
 

সভায় সদর ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।


 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-৪০০৭