হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাও ইউনিয়ন। মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুশিয়ারা নদী। এক সময় নদীটিতে তীব্র স্রোতের দেখা মিললেও এখন আর সেই দৃশ্য নেই।

বর্তমানে শান্ত এক নদী নাম কুশিয়ারা। নদীটি শান্ত হলেও অশান্তির শেষ নেই দু’পাড়ের বাসিন্দাদের। এ পাড়ে বড় সাঁকোয়া গ্রাম। আর নদীর অপারে ছোট সাঁকোয়া গ্রাম। এছাড়াও আশপাশে রয়েছে আরো অন্তত ১০ থেকে ১২টি গ্রাম। বর্তমানে দুই সাঁকোয়া গ্রামের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে কুশিয়ারা নদীর মধ্যে থাকা বাঁশের সেই সাঁকোটি। যা পাড়াপাড়রের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে ওই এলাকার মানুষদের জন্য। আর এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।


স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে তারা চলাচল করলেও একটি ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই সাঁকোয়া গ্রামের মধ্যে থাকা বাশের সাঁকো দিয়ে নদী পাড়াপাড় হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আবার অনেককেই ছোট ছোট নৌকা দিয়েও মালামাল আনা নেওয়া করতে দেখা গেছে। এমতাবস্থায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

বিশেষ করে- দীর্ঘ বাঁশের সাকোটি পাড়াপাড় হতে সময় বেশি লাগায় বেশি দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের এখানে যদি একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হতো তা হলে আমাদের এতো দূর্ভোগের শিকার হতে হতো না। আমরা দাবি জানাই দ্রুত যেন প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করে। দুর্ভোগে থাকা অন্যান্য গ্রামগুলো হল, সর্দারপুর, পুরারুস্তমপুর, পথে নগর, কালিয়ারভাঙ্গা, ছোট সাঁকোয়া, বড় সাঁকোয়া। এছাড়াও আশপাশের আরো অন্তত ৩ থেকে ৪ গ্রামের বাসিন্দারা এ সাঁকোটি ব্যবহার করে থাকেন।

চলতে চলতে কথা হয় ফসল মিয়া নামে এক যুবকের সাথে। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ‘একটি ব্রিজের জন্য যুগের পর যুগ ধরে আমরা অপেক্ষা করছি। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়েও কথা রাখছেন না। যে কারণে আমরা নিজের শরীর নিয়ে চলাচল করতে পারলেও মালামাল আনা নেওয়া করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের। এছাড়াও মোটর সাইকেল কিংবা কোন যানবাহন এখান দিয়ে পাড়াপাড় করা যায় না। যার ফলে আমাদের এলাকাটি মূল এলাকা থেকে বিচ্ছিন্নই বলা চলে।
তিনি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কলেজছাত্র রনি জানান, নবীগঞ্জ শহরে আসা যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তাটি। কিন্তু নদীর কুশিয়ারা ভাগে ব্রিজ না থাকায় আমাদের যাতায়তে অসুবিধা হচ্ছে। একটি বাইসাইকেলও সাকো দিয়ে পাড়াপাড় করা যায় না। ফলে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে।

কৃষক রহিম মিয়া জানান, আমাদের চাষাবাদের জমি নদীর দুই পারেই রয়েছে। তাই চাষাবাদ করার সময় কৃষি যন্ত্রপাতি এপার থেকে ওপার দিয়ে আনা কষ্ট হয়ে যায়। ফসল আনা-নেয়া করতে কষ্টের পাশাপাশি ব্যয় বেশি হয়ে যায়। তাই এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে আমরা উভয় পাড়ের লোকজন উপকৃত হতাম।

এ বিষয়ে করগাও ইউনয়িনের নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানা জানান, আমি সবেমাত্র বিজয়ী হয়েছি। এখনও শপথ নেইনি। দায়িত্ব পাওয়ার পর এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডি.আর