বহুল প্রত্যাশিত পাহাড়ি খরস্রোতা চেলা নদীতে একটিমাত্র ব্রিজের অভাবে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের নরসিংপুর, ছাতকের ইসলামপুর ও সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অন্তহীন ভোগান্তি। বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে বাঁশের সেতুই একমাত্র ভরসা ওই অঞ্চলের ভূক্তভোগি ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজনের। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থাকলেও অবহেলিত ওই তিন ইউনিয়নবাসীর স্বপ্ন পূরণে কার্যত কেউই এগিয়ে আসেননি। শুধু প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ।

প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রাই প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও শুকনো মৌসুমে বাঁশ ও খুঁটি দিয়ে সেতু তৈরি করে কোনোরকম পারাপারের ব্যবস্থা করে থাকেন। যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হলেও দীর্ঘপ্রশস্ত পাহাড়ি খরস্রোতা চেলা নদীর উপর একটি ব্রিজ স্থাপনে নজর পড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ফলে নদীর দু’প্রান্তের মানুষের সেতুবন্ধন অধরাই রয়ে গেলো।


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান এমপি মহোদয় বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ঐতিহ্যবাহী শিল্পনগরী ছাতকে শুভ আগমন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট ওই তিনটি ইউনিয়নের নিপীড়িত অধিবাসীর পক্ষে নৌকা প্রতীকে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত নরসিংপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদের দাবি- বৃহত্তর নাছিমপুর বাজার সংলগ্ন চেলা নদীতে বহুল প্রত্যাশিত ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’ নির্মানের। ব্রিজটি নির্মিত হলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়িত হবে। এতে করে তিন উপজেলার তিন ইউনিয়নের মানুষজন অতি সহজে স্বল্প সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় শহর ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের পথ সুগম ও নিরাপদ হবে বলে তিনি আশাবাদি।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা (ইউপি কমান্ডার) চাঁন মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর নিজেদের খরচে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করলেও বর্ষাকালে ওই নদীতে পানি টুই-টুম্বুর করে। তখন নৌকেই একমাত্র ভরসা। স্থানীয় বৃহত্তর নাছিমপুর বাজার খেয়াঘাট নামক স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে তিনটি ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হবে। মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বরাবরে জাতির জনক স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সেতু নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি।

ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট সুফি আলম সোহেল বলেন,‘ওইসব এলাকায় আমাদের যাতায়াতে বর্ষায় একমাত্র সম্বল নৌকা আর শুকনা মৌসুমে বাঁশের সেতু। খরস্রোতা পাহাড়ি চেলানদী, বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে উপচেপড়া পানিতে ওই অঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে চরম বিপর্যয় ঘটে। নৌকাডুবি আর সেতু ভেঙে প্রায়ই দূর্ঘটনায় প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটেছে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এম মান্নান এমপি মহোদয়ের নিকট বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সেতু নির্মানের দাবি জানাই।

এ প্রসঙ্গে নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলে তিন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মানুষজন সুফল ভোগ করবে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এমএ মান্নান এমপি মহোদয়ের নিকট চেলা নদীর উপর বহুল প্রত্যাশিত ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’নির্মাণের জোর দাবি জানাই।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিটি-৮