পুলিশকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন সুমাইয়া আক্তার মৌ নামে। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তার নাম সামিয়া ইসলাম মৌ। মৌ-এর আসল নাম নিয়ে দেখা দিয়েছে ধুম্রজাল। এলাকাবাসী তাকে সামিয়া ইসলাম মৌ নামেই চিনেন।

তিনি দক্ষিণ সুরমার কদমতলীর বাসিন্দা। ইতোমধ্যে বিয়ে করেছেন দুইটি। তার প্রথম স্বামী কামরুল চৌধুরী সিলেটি নাটকের পরিচালন ও একজন গীতিকার। কামরুল-মৌয়ের সংসারে এক ছেলে সন্তানও রয়েছে। তার বয়স ৬ বছর। পারিবারিক কলহে মৌ-কামরুলের সংসার ঠিকেনি।


বিয়ের পরও মৌ ছিলেন বেশ বেপরোয়া। তা-ই কামরুল-মৌয়ের সংসার ভেঙে যায়।
মৌয়ের সাথে ছাড়াছাড়ির পর কামরুল তার ছেলে সন্তান সামীকে নিজেই লালন-পালন করছেন। এরপর মৌ সংসার পাতেন সবুজ নামের আরেকজনের সাথে। সেই সংসারে মৌয়ের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সবুজের সাথে সংসার এখন ঠিকে আছে কি-না জানা না গেলেও সম্পর্কের দূরত্ব চলছে বলে জানা গেছে।

মৌ সুন্দরী ও সুদর্শন এক নারী। সিলেটে বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ড করে আলোচনায় আসেন বার বার। এরআগেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সিলেট নগরীর চারাদিঘীরপারে বছর পাঁচেক আগে অলিভট্রি নামের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ছিল। ওই রেস্টুরেন্টে শিশার আসর বসতো প্রায়ই। অলিভট্রিতে মৌয়ের যাওয়া আসা ছিলো সবসময়। সেখানে তিনি শিশা সেবন করতেন। অলিভট্রির শিশা সেবনের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে ওঠে আসলে ওই সময় মৌ আলোচনায় ওঠে আসেন।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যারাতে সিলেটের সালুটিকর থেকে মাদকদ্রব্যসহ মৌ ও তার এক পুরুষ সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সুমাইয়া আক্তার মৌ সিলেটের দক্ষিণ সুরমার স্বর্ণশিখা আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর বাসার বসিন্দা। তিনি অভিনেত্রী ও মডেল হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আলোচিত। ওই সময় তিনি তার দুই প্রেমিকসহ বন্দরবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন।

সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার নাটকের অভিনেত্রী হিসেবে মৌর পরিচিতি থাকলেও বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ এবং মাদকদ্রব্য সেবনে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের জুন মাসে সুমাইয়া আক্তার মৌ সিলেটের হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী সবুজ ও সাজুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। ওই সময় বেশ কয়েক মাস ওই দুই যুবকের সঙ্গে একযোগে প্রেম চালিয়ে যান। ওই সময় তার স্বামী নগরীর কুমারপাড়ার বাসিন্দা কামরুল ইসলামের অজান্তে সবুজ ও সাজুকে নিয়ে মৌ অনেক স্থানে নির্জনে সময় কাটান। একপর্যায়ে সবুজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাগ বসানোর চেষ্টা করেন মৌ। এই বিষয় এবং মৌ-এর সঙ্গে সবুজ ও সাজুর ত্রিভুজ প্রেম নিয়ে ত্রিমুখী বিরোধ বাঁধে।

এই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে ২০১৪ সালের ১২ জুন। ওইদিন রাত ৯টার দিকে সবুজ ও সাজুর সঙ্গে নগরীর সিটি পয়েন্ট এলাকায় ঝগড়া শুরু করেন মডেল মৌ। জনাকীর্ণ স্থানে ঝগড়া শুরু হওয়ায় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তিনজনকেই আটক করে। তখন পুলিশকে সবুজ ও সাজু জানান, মৌ তাদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট থানাধীন সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম খান সিলেটভিউ-কে জানান, শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে মৌ ও তার বন্ধু সোহেলকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠান হয়েছে। তিনি বলেন, তাদেরকে ২ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করা হয়েছে। মৌ'র সঙ্গে আটক হওয়া সোহেল আহমদ সিলেটের জালালাবাদ থানার নাজিরেরগাঁও গ্রামের আবদুস শুকুরের ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/এনএইচএস-২০