করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু মাঠের চিত্র ভিন্ন। অলি-গলি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, হাটবাজারসহ সর্বত্রই মানুষের ভিড়। সব জায়গাতেই উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। বেশির ভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। অনেকে মানছেন না সামাজিক দূরত্ব।

এদিকে অন্য সময় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনকে মাঠে সক্রিয় থাকলেও এবার ব্যতিক্রম। প্রশাসনকে মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সাধারণ মানুষের অনীহা ও প্রশাসনের ঢিলেঢালাভাবের কারণে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।


সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনার টিকা নেওয়ার সনদ দেখাতে হবে। গণপরিবহনে আসন সংখ্যার বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সারা দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জেলা শহরের চৌধুরী বাজার, পৌর বাস টার্মিনাল, সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতাল, হাটবাজার, গণপরিবহন—কোথাও কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বেশির ভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। আসনসংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে দূরপাল্লাসহ অভ্যন্তরীণ পরিবহনে। এদিকে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় জটলা বেঁধে খাবার খাচ্ছেন মানুষ।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, কয়েক মাস করোনা সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় থাকলেও সম্প্রতি বেড়েই চলেছে সংক্রমণ।

অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল জানান, গত মঙ্গলবার থেকে হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের নিচে নামছে না। এর মধ্যে ৫ জানুয়ারি সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ ৬৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে উঠে যায়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তিনি স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দেন।

শহরের শায়েস্তানগর কাঁচাবাজারে ক্রেতা মো. মঈনুল হাসান মাস্ক না পরেই বাজার করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কি করোনা আছে? মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে।’

ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক আক্তার হোসেনকে মাস্ক না পরার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘বয়স হইছে। এখন বেশি সময় মাস্ক পইরা থাকতে পারি না, দম বন্ধ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে ভিড়ের মধ্যে গেলে মাস্ক পরি।’

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে পুলিশ প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এবারও বিধিনিষেধ আরোপ করার পরই পুলিশের বিভিন্ন দল স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মাঠে কাজ করছে।’

 

সিলেভিউ২৪ডটকম/কাজল/নাবিল