একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢল- এ দুইয়ে মিলে সিলেটে বন্যার পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই সিলেটের নিম্নাঞ্চলগুলো পানির নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে দ্রুত বাড়ছে পানি। এদিকে, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদীগুলোর পানিও ক্রমেই বাড়ছে। কোনো কোনো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অশনীর প্রভাব আর পশ্চিম লঘুচাপের সঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয়বাষ্পের সংমিশ্রণে বাংলাদেশ অঞ্চলে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালার কারণে গেল কয়েকদিন ধরে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো মাঝারি, কখনো ভারী, আবার কখনো অতিভারী বৃষ্টি ঝরছে।


সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, সিলেট অঞ্চলে এই বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হচ্ছে উজানের ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম (বরাক অববাহিকা) প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই-কংস, ধনু-বাউলাই, মনু ও খোয়াই নদীর পানি বেশ কিছুটা বেড়েছে। কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, পিয়াইনসহ সব নদীর পানি বাড়ছে। অব্যাহত বৃষ্টি আর উজানের ঢলে গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি। এসব গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এ উপজেলায় ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে। একই অবস্থা গোয়াইনঘাটেও।

এদিকে, আপাতত বৃষ্টি থামার কোনো পূর্বাভাস নেই সিলেটে। ফলে বন্যায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে ১৮ মে অবধি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলা বৃষ্টি বেশি হবে।

সিলেট পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ে। এটাই মূল প্রভাবক। এর সাথে সিলেটে বৃষ্টিও যোগ হয়েছে। নদীর পানি বাড়ার কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে