(প্রতীকী ছবি)

বিয়ের হয়েছিলো মাত্র এক মাস। পুরোপুরি মুছে যায়নি হাতের মেহেদির রঙ। এরই মাঝে স্বামীর হাতে ‘বিষ’ খেয়ে লাশ হতে হলো নববধূ লনি বেগমকে (২৪)। 

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সোমবার (১৬ মে) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নববধূ লনি। তিনি সিলেট এয়ারপোর্ট থানার সাহেবের বাজার এলাকার বাজারতল গ্রামের মৃত আতাব খানের মেয়ে। ময়না তদন্ত শেষে সোমবার বিকাল ৪টার দিকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বামীর মারধর ও বিষ খাওয়ানোর ফলে লনির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 


নববধূ লনির অভিযুক্ত জামাল উদ্দিন (৪২) সিলেট এয়ারপোর্ট থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মহালদিক গ্রামের মৃত টিকই মিয়ার ছেলে। গত শুক্রবার রাতে জামালকে গ্রেফতার করে এয়ারপোর্ট থানাপুলিশ। পরদিন তাকে জেলহাজতে পাঠান আদালত। বর্তমানে জামাল জেলেই আছেন।

লনির ভাই অ্যাডভোকেট ইমাম উদ্দিন খান সিলেটভিউ-কে জানান, সদ্য গত রমজানের আগের দিন জামাল উদ্দিনের সঙ্গে পরিবারিকভাবে লনির বিয়ে হয়। বিয়ের সময় লনির বাবার বাড়ি থেকে কোনো ফার্নিচার দেওয়া হয়নি। কথা ছিলো রমজানের পর দেওয়া হবে। কিন্তু রমজানে মধ্যবর্তী সময়ে জামাল উদ্দিন ফার্নিচার নয়, নগদ ৩ লক্ষ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য লনিকে চাপ দিতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে একটু মনোমালিন্য হয়। ঈদের পরপরই বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে যেতে গত ২৭ রমজান রাতে ফের চাপ দিতে থাকেন জামাল। এতে লনি অসম্মতি জানালে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন তিনি। এক পর্যায়ে লনি গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাকে ওষুধ খাওয়ানোর কথা বলে বিষ খাইয়ে দেন স্বামী জামাল উদ্দিন। সেই থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নববধূ লনি। বিষয়টি ঈদের দিন জানতে পারেন তার বাবার বাড়ির লোকজন। ওইদিনই লনিকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। পরবর্তীতে শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে এবং লনিকে আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। লাইফ সাপোর্টে দুইদিন থাকার পর সোমবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে লনি চলে যান না ফেরার দেশে। 

এদিকে, লনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে এয়ারপোর্ট থানায় তার বড় ভাই নিজাম উদ্নি খান বাদি হয়ে জামালকে আসামি করে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই জামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে প্রেরণ করলে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। 

এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির সিলেটভিউ-কে বলেন, মৃত্যুর আগে পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে লনি তার স্বামীর প্রতি মারধর ও বিষ প্রয়োগের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। তার মৃত্যুর আগেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় স্বামী জামাল উদ্দিন জেলে আছেন। বিষ প্রয়োগের বিষয়ে ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর সঠিকভাবে বলা যাবে। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / আই.এ / ডালিম