দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতেই এ সংলাপ করবে দলটি।

মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।


গত ২৩ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো আজ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) এই আলোচনা আমরা শুরু করব। আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে রূপরেখা, সেই রূপরেখা তৈরি করা হবে। 

প্রথম দিন আজ (মঙ্গলবার) বিকাল ৫টায় রাজধানীর তোপখানা রোডের কার্যালয়ে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বিএনপি সংলাপে বসবে বলে জানিয়েছেন ফখরুল।

এই সংলাপ শুধু ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে হবে, না কি অন্যান্য দলের সঙ্গেও হবে- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবার সঙ্গেই হবে, অল দ্য পলিটিক্যাল পার্টিসের সঙ্গে।’

জামায়াতের সঙ্গে সংলাপ হবে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, ‘কথা তো বলতে হবে। অবশ্যই। তাদের সঙ্গে কথা না বললে কেমন করে হবে! সবার সঙ্গেই তো কথা বলতে হবে।’

২০ দলীয় জোট থাকবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২০ দলীয় জোট তো আমরা এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করিনি। এই জোটের কী হবে, সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজড (চূড়ান্ত) করব।’

এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য কী জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, মূল উদ্দেশ্য হলো— গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। এই ফ্যাসিবাদী সরকার, যারা সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে- এগুলো ফিরিয়ে নিয়ে এসে জনগণ ও ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করাই মূল লক্ষ্য। এ জন্য আন্দোলন তৈরি করা। এই আন্দোলন সৃষ্টি করার জন্য এই ঐক্যের আলোচনা শুরু করা হচ্ছে।

ঐক্যের মূল ভিত্তিটা কি হবে— এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূল যে দাবিগুলো আছে, এর মধ্যে প্রথম দাবি— বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি। দ্বিতীয় হচ্ছে— এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তৃতীয় হচ্ছে— সংসদ বাতিল করতে হবে।

‘তার পর পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি অবাধ-সুষ্ঠু এবং সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংসদ গঠিত হবে। এর পর সরকার গঠিত হবে। এই দাবিগুলোই প্রধান দাবি। 

এখন অন্যান্য দলের সঙ্গে আমরা এই আলোচনাগুলো করব। আর তাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করে আমাদের একটা একক দাবি তৈরি করা হবে। তার ভিত্তিতে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করব।

এটাকে কি জোট বলছেন— জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একটা জোট বলছি না। আলোচনার মাধ্যমেই সেগুলো নির্ধারিত হবে।

আলোচনা কি ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনা সবার সঙ্গেই হবে। আর ২০ দলীয় জোটে তো এখন পর্যন্ত আমরা বিলুপ্ত করি নাই। এই জোটের কি হবে, সেটি ওই আলোচনার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত করা হবে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিষয়েও একই কথা।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/জিএসি-০৬


সূত্র : যুগান্তর