সিলেট মহানগরীর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে অনেকেই নিজের বাসাবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন। সেই সুযোগে বেড়েছে চোরের উপদ্রব।

সর্বশেষ বুধবার দিবাগত রাতে শাহজালাল উপশহরের এ ব্লকের ২ নং রোডের ২ নং বাসায় জানালার গ্রিল কেটে ফাঁকা পড়ে থাকা বিভিন্ন ইউনিট থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্তত ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়েছে এক বা একাধিক চোর। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে চুরি হওয়া বাসা পরিদর্শন করেছে পুলিশ। 


ওই বাসার মালিক ফেরদৌস আহমেদ আরবী সিলেটভিউ-কে জানান, এক সপ্তাহ আগে বাসায় পানি ঢুকে যায়। তারপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি নগরীর মজুমদারী এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। তাদের বাসায় না থাকার সুযোগে বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় বাসার জানালার গ্রিল কেটে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার কয়েকটি কক্ষে ঢুকে ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোনসহ অন্তত ১৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায় চোর।   সকালে প্রতিবেশিরা জানালার গ্রিল কাটা দেখে ফেরদৌস আহমেদকে খবর দিলে তিনি বাসায় এসে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে শাহপরাণ থানা ও উপশহর কেন্দ্রের পুলিশ এসে বাসাটি পরিদর্শন করে। 

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ফেরদৌস আহমেদ আরবী। 

ফেরদৌস আরবী অভিযোগ করে বলেন, দুই নম্বর রোডে তার বাসার অবস্থান এবং ৫ নম্বর রোডে পুলিশ ফাঁড়ি। তবু তার বাসায় চোরেরা নির্বিঘ্নে চুরি সংঘটিত করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, তার বাসার আশেপাশে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অনেকগুলো সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু এগুলো বেশ কয়েকদিন ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না সিসিক। ফলে চোরেরা বিনা বাঁধায় চুরি করতে পারছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) শাহপরান (র.) থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য সিলেটভিউ-কে বলেন, ঘটনাস্থল আমরা পরিদর্শন করেছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আমরা চোরদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চালাবো।  

উল্লেখ্য, গত ১০ মে থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সেই সঙ্গে উজান থেকে একের পর এক নামতে শুরু করে পাহাড়ি ঢল। ফলে ১১ মে থেকে  সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। আর ১৩ মে থেকে সিলেট নগরের নিম্ন ও সুরমা তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হতে থাকে। ফলে ২০০৪ সালের মতো ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয় সিলেটে।
 
বন্যা পরিস্থিতির কারণে নগরীর শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, শেখঘাট, কলাপাড়া, সোনাপাড়া, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, ছড়ারপার, চালিবন্দর কানিশাইল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায় এবং বাসাবাড়িতে পানি উঠে যায়। এতে এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। গত ২০ মে থেকে পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলেও এখনও কিছু এলাকার বাসাবাড়িতে পানি রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকদিন বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ ছিলো শাহজালাল উপশহর, কলাপাড়া, মেন্দিবাগ ও মাছিমপুরসহ কয়েকটি এলাকায়। এ অবস্থায় সিলেট মহানগরীতে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। প্রায় প্রতিদিন রাতেই বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে চুরি হওয়ার খবর পাওয়া যায়।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম