পাহাড়ি ঢল ও টানাবর্ষণে মাসখানেকের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় কবলিত সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যার্ত প্রায় ৪৩ হাজার পরিবারের সদস্যদের হাতে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার দিয়েছে ‘সিলেট এইড’।

 


হঠাৎ করেই দ্বিতীয় দফায় সিলেট-সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার ফলে এসব এলাকায় দেখা দেয় তীব্র খাবার সংকট। আর বন্যার মতো ওই সংকটকালীন সময়ে অভুক্ত মানুষের মধ্যে খাদ্য সহায়তা নিয়ে সিলেট এইড বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর ফলে মানুষ ব্যাপক উপকৃত হয়েছে।

 

বন্যা শুরু হওয়ার পর ১৭-২৪ জুন পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যার্ত প্রায় ৪৩ হাজার পরিবারের সদস্যদেরকে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার তুলে দিয়েছে মানবতায় সেবায় নিয়োজিত এই সংগঠনটি। ওই এক সপ্তাহে সিলেট-সুনাগঞ্জের প্রায় ২৬ হাজার ৩২০টি পরিবারকে রান্না করা খাবার (ভাত, ডাল, সবজি, মাংস, খিচুড়ি) এবং প্রায় ১৭ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার (চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট)। রান্না করা ও শুকনো খাবারের সাথে ‘বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন’ বিতরণের কার্যক্রম ছিল অব্যাহত।

 

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র, বিশ্বনাথ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র, দারুল উলুম ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা আশ্রয় কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আশ্রয় কেন্দ্র, দক্ষিণ সুরমার কামাল বাজার আশ্রয় কেন্দ্র, সদর উপজেলার কান্দিগাঁও আশ্রয় কেন্দ্র, গোয়াইনঘাট উপজেলার ডাবর আশ্রয় কেন্দ্র, ডেকর হাওর আশ্রয় কেন্দ্র, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর,  কানাইঘাট, জকিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর আশ্রয় কেন্দ্র, ইউসুফপুর আশ্রয় কেন্দ্র, কেনবাড়ী আশ্রয় কেন্দ্র, পাটারিয়া আশ্রয় কেন্দ্র, ছাতক উপজেলার টুকেরবাজার আশ্রয় কেন্দ্র, পাগলা বাজার আশ্রয় কেন্দ্র, হাবিবের জায়গা আশ্রয় কেন্দ্র, জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জের দুলার বাজার, মঈনপুর, রোয়েল।

 

সিলেট এইড-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি আব্দুর রহমান খালেদের খাবার বিতরণকারী গ্রুপের সদস্যরা হলেন- শাহ টিটু, তারেক আহমদ খজির, গোবিন্দ মালাকার, জাবেদ আহমেদ, মাহবুব আহমদ, রুকন, আকবর আহমদ, ইমরান আহমদ, শাহজাহান, ফাহিম আহমেদ, এ কে রাজু, আর এস রাসেল, জয় দেবনাথ, সালমান আহমেদ, একরাম হুসেন, নুরি, সুহেদ আহমেদ, মেহেদি হাছান মামুন।

 

দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর ধরে এতিম ও অসহায় মানুষের জন্য সিলেট এইড কাজ করছে যাচ্ছে জানিয়ে সংগঠনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি আব্দুর রহমান খালেদ বলেন, এবার সিলেটে বন্যার শুরুর পর শুক্রবার (১৭ জুন) রাত থেকেই খাবার বিতরণ শুরু করি আমরা।

 

সংগঠনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৩ হাজার বন্যার্ত পরিবারকে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আমরা আরও তিন হাজার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী (চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, লবণ) বিতরণ করবো। এছাড়া আমাদের সংগঠন এতিমদের লেখাপড়া ও ভরণপোষণের খরচ, ঘর তৈরি করে দিচ্ছে।

 

তাছাড়া নারীদের স্বাবলম্বী করতে তাদের মধ্যে গরু-ছাগল ও সেলাই মেশিন দিয়েছি এবং অসহায় মানুষদের মাঝে হুইলচেয়ার, টিউবওয়েল, কম্বল বিতরণ করেছি সংগঠনের পক্ষ থেকে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিবিএ/এসডি-৩৮