সিলেট অঞ্চলে বন্যার কবলে পড়েছে ৬৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে চার লাখেরও বেশি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে।

জানা গেছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সিলেট বিভাগ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। বন্যায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এ বিভাগের শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ে। আবার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


সার্বিক পরিস্থিতিতে গত ২২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইং থেকে অধিদপ্তরের সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালক ও উপ-পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বন্যায় কতোজন শিক্ষার্থী ও কতোগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবলিত হয়েছে, এর তথ্য মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইংয়ে ইমেইলে পাঠাতে বলা হয়। কলেজ পর্যায়ের তথ্য আঞ্চলিক পরিচালক এবং স্কুল পর্যায়ের তথ্য আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের ই-মেইল থেকে পাঠাতে বলে মাউশি।

এ বিষয়ে গত ২৬ জুন সিলেটভিউয়ে ‘সিলেটে বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চায় মাউশি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ওই চিঠির প্রেক্ষিতে মাউশি সিলেট অঞ্চলের কর্মকর্তারা জেলা ও উপজেলা পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে সেগুলো নির্দিষ্ট ছক আকারে অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠান।

প্রতিবেদন অনুসারে, সিলেট জেলায় ১৩টি উপজেলায় বন্যাকবলিত হয়েছে ৩৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ৮ হাজার ১৯৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।

সিলেটে বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৯টিতে পাঠদান চালানো সম্ভব, ৫০টিতে আংশিক পাঠদান সম্ভব। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনই পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়। সিলেট জেলায় ১৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার ২৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পড়ে বন্যার কবলে। ১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থী আছে এসব প্রতিষ্ঠানে। বন্যাকবলিত কোনো প্রতিষ্ঠানেই এখনই পাঠদান কার্যক্রম সম্ভব নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জেলায় ১৫০টি প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, মৌলভীবাজার ৫টি উপজেলার ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার ভয়াবহতার মধ্যে পড়ে। এসব প্রতিষ্ঠানে ৩৮ হাজার ৩৫৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনই পাঠদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। এ জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এদিকে, হবিগঞ্জ জেলার ৬টি  উপজেলার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হয়েছে। এগুলোতে শিক্ষার্থীসংখ্যা ৩৪ হাজার ৬৬১ জন। সবগুলোতেই বন্ধ রয়েছে পাঠদান। ৭৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এ জেলায়।

মাউশি’র প্রতিবেদনে বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীসংখ্যা ওঠে এলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে