পদ্মা সেতুর সফল নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কালে এ দেশের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। অবশেষে রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের প্রায় এক তৃতিয়াংশ জেলার প্রতক্ষ্য সংযোগ তৈরি হল। বহুযুগের অসংখ্য মানুষের স্বপ্নকে সত্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আত্মপ্রত্যয়, সততা, সিদ্ধান্তের দৃঢ়তা এবং অসীম সাহসের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। পদ্মা-মেঘনা-যমুনার কুলে কুলে হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা বাঙালি জাতির সংগ্রাম ও সাফল্যের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটালেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

 


ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির ভান্ডার বাংলার দক্ষিণ পশ্চিমের অঞ্চলগুলো। লোক সাহিত্য ও সংস্কৃতির অজস্র উপকরণ, আঙ্গিক এবং লোকপ্রিয় ধারা-উপধারা রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন জীবনে। বহু বছর ধরে স্বতস্ফুর্ত ভাবে চর্চিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে মিশে আছে বাংলা ও বাঙালির মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক দর্শনও। এই অসাম্প্রদায়িক দর্শন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করেছিলেন টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মুসলমান, হিন্দু এবং খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বি মানুষ।

 

সম্প্রীতি বাংলাদেশের উদ্যোগে সিরডাপ মিলনায়তনে আজ (২৮ জুন) ‘পদ্মা সেতু : সম্প্রীতির পথে সাফল্যের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় আলোচকদের বক্তব্যে এই বিষয়গুলো উঠে আসে।

এতে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন শ. ম. রেজাউল করিম এম.পি, মন্ত্রী, মৎস ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রনালয়।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কে. এম. খালিদ এম.পি, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সন্চালনায় এতে আলোচনায় অংশ নেন মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ আলী শিকদার, অধ্যাপক আতিয়ার রহমান, সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক নাসিম আখতার, উপাচার্য, চাদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া, সাধারন সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অসীম সরকার ও অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী ও ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসাদুজ্জামান চৌধুরী ।

 

পদ্মা সেতুর সফল নির্মাণ এবং উদ্বোধনে আন্দোলিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ। এই উপলক্ষ্যে আনন্দ উদযাপন করছে জাতীয় পর্যায়ের পরিচিত সংগঠনগুলো। সম্প্রীতি বাংলাদেশও অতীতের মত জাতীয় সাফল্যকে উদযাপন করছে গোলটেবিল আলোচনার মাধ্যমে, যেখানে আলোচিত হয়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি, যোগাযোগ,প্রকৌশল, বাণিজ্য ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো যা ভবিষ্যতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

 

পদ্মাসেতুর সফল উম্মোচনের পর এখন দেয়া-নেয়া হবে দক্ষিণের সাথে উত্তরের, পশ্চিমের সাথে পূর্বের সংস্কৃতি চর্চার। ফলে বাঙালির হাজার বছরের মানবতাবাদী দর্শন পাবে সম্মিলিত ভাবে উত্তোরত্তর শক্ত ভিত। এবং এটা নিশ্চিত যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে স্বতস্ফুর্ত রায় দেবেন দেশের মানুষ। পদ্মাসেতু শুধুমাত্র যোগাযোগ প্রক্রিয়াকেই ত্বরান্বিত করেনি। হাজারগুন বাড়িয়েছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার সোনার মানুষের মন দেয়া নেয়া।

 

হাজার বছরের বাঙালি পথ হাঁটবে আরো হাজার বছর।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-১৬