বন্যাকবলিত সিলেট জেলায় প্রায় তিন কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারিভাবে প্রাপ্ত টাকা প্রায় পৌনে তিন কোটি, বাকি টাকা বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত। তবে এই টাকাই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে সিলেট জেলা প্রশাসন। এখনও বন্যা পরিস্থিতি থাকায় বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য আরও ৭০ লাখ টাকা চায় তারা। এর মধ্যে নগদ বিতরণের জন্য প্রয়োজন ৫০ লাখ টাকা। এই টাকা বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে চিঠি।

এমনটাই জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান।


আজ রোববার দুপুরে বন্যাত্তোর পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসকের দেওয়া তথ্যানুসারে, গত ১৪ জুন শুরু হয়ে অদ্যাবধি চলমান দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৫টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় জেলার ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩টি পরিবারের প্রায় ৩০ লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েন। প্রায় ৪১ হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া, হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হওয়া ছাড়াও বন্যায় প্রাণহানি হয়েছে ১০ জনের। এখনও নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, পুকুর, রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

মো. মজিবুর রহমান জানান, বন্যাকবলিতদের মধ্যে এখন অবধি ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রাপ্ত ৬৫ লাখ টাকাও বিতরণ করা হয়েছে বন্যার্তদের মধ্যে। এর বাইরে ১ হাজার ৬১২ মেট্রিক টন চাল, শিশুখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা, গোখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ২১৮ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এখনও জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় ত্রাণ কার্য অব্যাহত রাখতে নগদ বিতরণের জন্য ৫০ লাখ টাকা, শিশুখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা এবং গোখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, ত্রাণ হিসেবে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৫০ হাজার ১১২ প্যাকেট (ছোট) দুধ পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্যায় বেসরকারিভাবে (বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে) নগদ ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৩ টাকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ৫১ হাজার ৮২৫ প্যাকেট খাবার পেয়ে বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে ২২ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ১৩ টন চাল, ১০ হাজার পিস স্যালাইন, ১০০ পিস গ্যাস লাইট, ৬০০ প্যাকেট শিশুখাদ্য, ১২শ পিস মোমবাতি ও ১০টি নৌযান পায় জেলা প্রশাসন। এগুলোর সবই বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে