মোমেন। পুরো নাম মুহিম উদ্দিন সরদার মোমেন। টগবগে যুবক। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর গ্রামের বোরহান উদ্দিন সরদারের ছেলে মোমেন একজন সফল ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত প্রচারবিমুখ এ যুবক। সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত দিরাই উপজেলার বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

 


গত ১৭ জুন মাত্র কয়েক ঘন্টায় পানি বেড়ে দিরাই পৌর এলাকাসহ উপজেলার ইউনিয়নগুলোর লাখো পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। হাজার হাজার বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অসহায় মানুষ আশ্রয় নেয় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মার্কেটসহ বহুতল ভবনে।

 

এ পরিস্থিতিতে খাবারের চরম অভাব দেখা দেয় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।

 

মুহিম উদ্দিন সরদার মোমেন বলেন, “বন্যা শুরুর দিকে কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে যাই। বয়স্ক মহিলা-পুরুষ হাত ধরে বলেন 'বাবারে তিন-চারদিনের মধ্যে ভাত খাই নাই। চিড়ামুড়ি খেতে আর ভালো লাগে না। পারলে আমাদের ভাত খাবাও। ভেতরটা মুচড়ে ওঠে। নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেশবিদেশের বন্ধু ও স্বজনদের সহযোগিতা চেয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করি। ওই ভিডিওতে আমি শুধুমাত্র আমার আপনজনদের সহযোগিতা চাই। এজন্য আমি কোন বিকাশ নম্বর দেইনি। আমার ইচ্ছে ছিল আমার বন্ধু ও স্বজন যারা আমাকে এ কাজে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। শুধু তাদের কাছ থেকে হেল্প নেবো।”

 

মোমেন বলেন, বন্ধুরা ও স্বজনদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। রিলেটিভদের কাছ থেকে আমি প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মতো পেয়েছিলাম।

 

মোমেন জানান, বন্যা শুরুর দিকে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে চারদিনে পাঁচ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়। এরপর থেকে প্রতিটি এক হাজার টাকা মুল্যের চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মরিচসহ নিত্যপণ্যের প্যাকেজ প্রায় ৫শ বানভাসি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

 

ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন, ওয়ারেন্ট অফিসার সৈকত হোসেনসহ দিরাইয়ে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের বিতরণ কাজে নৌযান ও নিরাপত্তা দিয়ে উনারা সহযোগিতা করেছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/এইচপি/এসডি-০৩