গত তিনদিন সিলেটের আবহাওয়া বেশ রৌদ্রোজ্জ্বল। দীর্ঘ বন্যার পর এখন কাঠফাটা রোদ আর তাপপ্রবাহে পুড়ছে সিলেট। তবুও ধীরগতিতে নামছে পানি। যে কারণে সিলেটের বেশ কয়েক জায়গা এখনও জলাবদ্ধ। হাঁটুজল পেরিয়ে যাতায়াত করছেন মানুষ। যে কারণে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। সেইসাথে বন্যায় বিভিন্নস্থানে রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

এমন ভোগান্তি দেখা গেছে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি এলাকায়। কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমরসমান পানি। এসব এলাকার দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপর্যস্ত ব্যবসায়ীরা। জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছে সহস্রাধিক পরিবার।


১৯ দিন পর সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হলেও দক্ষিণ সুরমাসহ কয়েকটি এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়ে গেছে। ধীরে ধীরে পানি কমতে থাকলেও অল্প সময়ের বৃষ্টিতে ফের এসব জায়গায় পানি বৃদ্ধি পায়।

এদিকে সিলেটের জকিগঞ্জে আবার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীর পানি প্রায় দেড় ফুট বেড়েছে। কোথাও কোথাও আগের ভাঙন দিয়ে পানিও লোকালয়ে ঢুকার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণেও পানি দেখা গেছে। বঙ্গবীর সড়ক ও চন্ডীপুল মোড়ে জ্বালানি তেলের দুটি পাম্প পানিতে তলিয়ে থাকায় তেল সরবরাহ বন্ধ ছিল। একইভাবে জলাবদ্ধতার দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে নগরীর উপশহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চলে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি না কমায় এলাকার পানি নামছে না। একইসাথে এই এলাকার খাল, ছড়া ও বক্স কালভার্টে ময়লা-আবর্জনা জমে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ায় পানি নামছে খুব ধীরে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জানিয়েছে, সিলেটের নদ-নদীর পানি সুনামগঞ্জ দিয়ে নামে। সুনামগঞ্জে পানি বেশি থাকায় পানি নামতে সময় লাগছে।

এদিকে বন্যাকবলিত এলাকায় রাস্তাঘাটে জমে থাকা ময়লা পানি ও আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বন্যায় ভেঙে যাওয়া ক্ষত-বিক্ষত রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার যেসব স্থান থেকে বন্যার পানি নেমেছে সেসব এলাকায় এখন চলছে আশ্রয়হীন মানুষের আর্তনাদ। ঘরের পাশাপাশি আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও ভেসে গেছে বানের পানিতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এখন তারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। বন্যায় সর্বস্ব হারানো লোকজন যেখানে খাবার ও পানীয় সংকটে দিশেহারা সেখানে নতুন করে ঘর তৈরি বা মেরামত তাদের কাছে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

সোমবারও (৪ জুলাই) সিলেটের এদিকে কিছু দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ও ঘরে পানি থাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বানভাসি এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিডি