সিলেটে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে সর্দি-জ্বর ও কাশি। এসব অসুখ করোনার অন্যতম উপসর্গ হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন সচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অসুস্থতা প্রকট না হলে কেউ করোনা পরীক্ষা করাতেও যাচ্ছে না। তবে গেল কয়েকদিন থেকে নমুনা পরীক্ষায় করোনা সনাক্তের হার বাড়ছে বলে জানা গেছে। গেল এক মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ জন। চিকিৎসকরা বলছেন, বছরের এই সময়ে সর্দি-জ্বরের প্রকোপ থাকে। তবে এবার যেভাবে ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর হানা দিচ্ছে তাতে পরীক্ষা করালে করোনা সনাক্তের হার অনেক বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গেল প্রায় এক মাস ধরে সিলেটে সর্দি-জ্বর ও কাশির প্রকোপ বেড়েছে। কোন পরিবারে একজন আক্রান্ত হলে পর্যায়ক্রমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সবাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সর্দি-জ্বরে আক্রান্তরা চিকিৎসকের শরাণাপন্ন না হয়ে ফার্মেসি থেকে উপসর্গের বর্ণনা দিয়ে ঔষধ কিনে সেবন করছেন। এর মধ্যে কারও অবস্থা প্রকট হয়ে দাঁড়ালে তবেই তারা শরণাপন্ন হচ্ছেন চিকিৎসকের। আর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নমুনা পরীক্ষা করার পর অনেকেরই করোনা পজেটিভ ধরা পড়ছে।


চিকিৎসকরা মনে করছেন, সিলেটে যেভাবে সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে তাতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে করোনা আক্রান্তের হারও বাড়বে। কিন্তু শারীরিক অবস্থা খুব বেশি খারাপ না হলে কেউই নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহী হচ্ছেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গেল এক মাসে সিলেটে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসকও রয়েছেন। আর এক মাসে নমুনা পরীক্ষায় আরও ৩৮৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এক মাসে অর্থাৎ গত ২৩ জুন সিলেট বিভাগে মাত্র ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। ওইদিন পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত কোন রোগী সনাক্ত হয়নি। ১ জুলাই ২৭১ জনের নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত সনাক্ত হন ১২ জন। আর গতকাল শনিবার ১৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ১৭ জন। অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত সনাক্তের হার ১১.৭২ শতাংশ। চলতি মাসে এই হার ২০ এর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল।

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত জানান, সিলেটে করোনা সংক্রমণ আতঙ্কিত পর্যায়ে না হলেও বাড়ছে। করোনার অন্যতম উপসর্গ জ্বর ও সর্দিতে অনেক লোক আক্রান্ত। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক মানুষ করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। তাই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম মনে হচ্ছে। তবে যাদের কিডনি, লিভার, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত করোনা উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষা করানো। তা না হলে এমন রোগীর জীবন সংশয়ের শঙ্কা থেকে যায়।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিডি