সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষিপ্রসাদ (কান্দিগ্রাম) এর সৌদিআরব প্রবাসী মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়ার ছেলে উসমান গনি নিশাত (১৭) হত্যাকাণ্ডের রায় আগামী সোমবার (৮ আগস্ট) প্রকাশ হবে।  মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রায় প্রকাশ হবে। 

জানা যায়- নিশাত ২০১৫ সনের ৩০ জুন মঙ্গলবার বাড়ী হতে পার্শ্ববর্তী কানাইঘাট উপজেলার চতুল বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে বাড়ী ফিরেনি। সম্ভাব্য সকল স্থানে খুঁজে তার কেনো হাদিস পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২ জুলাই উপজেলার দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে সুতারি খালে তার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তৎকালীন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) কামাল দুপুর সাড়ে ১২টায় লাশ উদ্ধার করে অধিকতর তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। লাশ উদ্ধারের পূর্বেই নিশাতের পিতা মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়া ১ জুলাই জৈন্তাপুর মডেল থানায় অপহরণ ও পূর্বক ছেলেকে গুম করা হয়েছে মর্মে অবহিত করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসাবে ৪ জনকে আটক করে।


আটককৃতরা হল- জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চাক্তা গ্রামের সুলেমান আহমদের ছেলে রেজওয়ান আহমদ (১৯), লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে ফখরুজ্জামান (২৯), হারাতৈল গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে হাফিজ নাজমুল ইসলাম ফয়ছল (২১), লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম গ্রামের মৃত বকুল মালাকারের ছেলে মকুল মালাকার (২১)। 

আটকের পর তৎকালীন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাক চন্দ্র বসাক এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায় নিখোঁজ কিশোর নিশাত সহ আটককৃতরা কানাইঘাটের চতুল বাজারে ঘটনার দিন দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এক সাথে ফেন্সিডিল ও স্থানীয় ভাবে তৈরি ঝাঁকানাকা সেবন করেছিল। এছাড়া তথ্যগত বিভিন্ন ধরনের গরমিল পাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে আটক করে কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। কানাইঘাট থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিন জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউপির দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ফখরুল ইসলাম বকুল (৪০) কে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর আসামী দূর্গাপুর গ্রামের এবাদুর রহমান ওরফে এবাইর ছেলে দুলাল আহমদ (৪২) কে আটক করা হয়। দীর্ঘ ৭ বৎসর শুনানির পর মামলার সাক্ষী প্রমাণ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আগামী ৮ আগস্ট আলোচিত ও পৈশাচিক কায়দায় দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উসমান গনি নিশাত (১৭) হত্যাকাণ্ডের রায় সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রায় প্রকাশ হবে। 

নিহতের পিতা মন্তাজ আলী ওরফে ময়না মিয়া জানান, দীর্ঘ দিন পর মাননীয় আদালত রায় প্রকাশ করবেন। আমি আশাবাদী ও দেশের আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল আদালত কর্তৃক আমার ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাইয়ে দিবেন। 


সিলেভিউ২৪ডটকম/সাব্বির/মুন্না