শান্তিগঞ্জ উপজেলার আসামপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান। ৯ সদস্যদের পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। কোন কাজকর্ম না থাকায় পরিবারের ভরনপোষনে অনেক কষ্ট হয় তার।

 


গেল বন্যায় সবকিছু তছনছ হয়ে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম ছিলেন তিনি। কোন কাজ না থাকায় অনেক সময় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। তবে সম্প্রতি হাবিবুর রহমানের এই কষ্ট লাগবের ব্যবস্থা করেছে শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ৷

 

প্রশাসনের মানবিকতায় হাবিবুর রহমানসহ তিন দিন মজুর পরিবারকে ভ্যান উপহার দেয়া হয়েছে। এখন থেকে এই সরকারি দেয়া ভ্যানেই চলবে তাদের জীবনের চাকা। সরকারি ভ্যান পেয়ে খুশিতে আত্মহারা এই দিনমজুর পরিবারগুলো। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ তারা। এখন থেকে আর না খেয়ে থাকতে হবে না তাদের পরিবারের সদস্যদের। পরিবারের হাল ধরতে অনেক উপকারে আসবে সরকারি সহায়তার এই ভ্যানগুলো।

 

জানা যায়, এডিপি এর অর্থায়নে ইউনিয়ন পর্যায়ে উদ্যোক্তা তৈরীর লক্ষ্যেই উপজেলার জয়কলস গ্রামের সুমিত্রা বিশ্বাস, অগ্রসেন বিশ্বাস ও হাবিবুর রহমানকে পরিবারের আর্থিক সংকট মেটানো ও তাদের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ভ্যানগাড়ি উপহার দেয় শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ। শুধু এই তিনজনকেই নয় বেকার দিনমজুরদের আত্মকর্মসংস্থান তৈরীতে আরও অনেক প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

 

ভ্যানগাড়ি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা সুমিত্রা বিশ্বাস বলেন, কোন কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। তবে এখন আর কষ্ট থাকবে না। ভ্যান দিয়ে পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারব। আমি ও আমার পরিবার উপজেলা প্রশাসনের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

 

সুমিত্রা বিশ্বাসের পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাবিবুর রহমান বলেন, আগে আইসক্রিম বিক্রি করতাম। কোন রকমে পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে ছিলাম। কষ্টের শেষ ছিলনা আমাদের৷ তবে এবার আর কষ্ট থাকবে না আমাদের, উপজেলা প্রশাসনের দেয়া ভ্যান ব্যবহার করে পরিবারের ভরনপোষণ করতে পারব। আমি ও আমার পরিবার অত্যন্ত খুশি।

 

কথা হলে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, আমরা এখন থেকে যারা অসহায়, দিনমজুর, বেকার তাদের কর্মসংস্থানের জন্য আরও কাজ করব। মানুষের কল্যাণে যা করার সব করবে উপজেলা পরিষদ৷ যাদের ভ্যান দেয়া হয়েছে তারা এখন এটা ব্যবহার করে তাদের পরিবারের ভরনপোষণ করতে পারবেন। তাদের পরিবারের জন্য এই সরকারি সহায়তা কিছুটা হলেও উপকারে আসবে।

 

এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামান বলেন, যাদেরকে ভ্যান দেয়া হয়েছে তারা সবাই এখন এটাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। আমরা আশাবাদী তারা তাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। অসহায়, দিনমজুর মানুষদের যাতে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় তার জন্য কাজ করছি আমরা। আমাদের সহায়তা সবসময়ই অব্যাহত থাকবে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/সামিউল/এসডি-১৬