বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে বুধবার (৫ অক্টোবর) দশমী তিথি। শাস্ত্র মতে, এ তিথিতে দেবী দুর্গা মর্তলোকে তার বাপের (বাবা) বাড়ি থেকে সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কৈলাসের দিকে যাত্রা করেন। অগণিত ভক্তদের মনে তাই আজ বুধবার ছিল বিদায়ের বিষাদ।

 


দেবীর বিদায়ের কষ্ট ভুলে থাকতে এবং হাসিমুখে বিদায় জানানোর জন্য সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ভক্তরা মত্ত হন সিঁদুর খেলায়।

 

বুধবার ৫ অক্টোবর সকালে পৌরসভার শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর মন্দির, শ্রীশ্রী কালি মন্দির, শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, মজলিশপুর পূজা মণ্ডপ, হারনপুর পূজা মণ্ডপসহ বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, লাল শাড়ি, সাদা শাড়ি লাল পাড় পোশাকে ছেয়ে আছে। দেবীকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর জন্য নারীদের ভিড়।

মুখ রঙিন করে হাসি মুখে মাকে বিদায় জানানোর জন্যই সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছেন তারা। সিঁদুররাঙা মুখে দেবীকে জানানো হয় বিদায়।

অন্যদিকে শিশু, কিশোর, কিশোরীরা মেতে উঠেছে রং খেলায়। এদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কালনী নদীতে নৌকা করে ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে দুর্গা মূর্তি নিয়ে যাত্রায় যেতে দেখা যায় আয়োজকদের।

 

সার্বজনীন শারদীয় শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা কমিটি চান্দপুর পশ্চিম হাটির সভাপতি মহনলাল সূত্রধর বলেন, বিজয়া দশমীতে মা দুর্গাকে বিদায় জানানোর দিন। এই দিনটি শেষ হয় মহাআরতির মাধ্যমে। এর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

 

দিরাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ধনীর রঞ্জন রায় বলেন, কৈলাসে ফিরবেন দেবী দুর্গা। বিজয়া দশমীতে পূজা-অর্চনার পর নানান আয়োজনে বিসর্জন দেওয়া হয় দেবীকে। ‘বাবার বাড়ি বেড়ানো’ শেষে মা দুর্গা এক বছরের জন্য ফিরে যাবেন ‘কৈলাসের শ্বশুরালয়ে’। আর এর মধ্য দিয়েই শেষ হবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় পার্বণ ‘শারদীয় দুর্গোৎসব।’

 

তিনি আরোও বলেন, এবছর দিরাইয়ে ৬৭ টি পূজা মণ্ডপে শান্তিপূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।

 

উল্লেখ্য গত শনিবার (১ অক্টোবর) উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নে ৬টি পূজা, ভাটিপাড়া ইউনিয়নে মোট ২টি পূজা, রাজানগর ইউনিয়নে মোট ৭টি পূজা, চরনারচর ইউনিয়নে মোট ১১টি পূজা, সরমঙ্গল ইউনিয়নে মোট ১১টি পূজা, করিমপুর ইউনিয়নে মোট ৭টি পূজা, জগদল ইউনিয়নে মোট ২টি পূজা, তাড়ল ইউনিয়নে মোট ৯টি পূজা, কুলঞ্জ ইউনিয়নে মোট ৫টি পূজাসহ পৌরসদরের ৭ টি পূজা মণ্ডপে ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে উপজেলার ৬৭ টি মণ্ডপে শুরু হয় দুর্গাপূজা। রোববার ছিল মহাসপ্তমী ও সোমবার মহাঅষ্টমী। আর মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) শুরু হয় নবমীর আনুষ্ঠানিকতা।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/হিল্লোল/এসডি-১১