বাংলা বা দেশীয় ভাষার উন্নতির জন্য কোনো উদ্যোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন লেখক-অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। 

তিনি বলেছেন, চারদিকে শুধু ইংরেজির ব্যবহার। এর মাধ্যমে আমাদের আত্মউন্নীত হচ্ছে। কিন্তু এর মাধ্যমে আমরা কী বার্তা দিচ্ছি? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কলাভবনের পাশের ভবনে দেখবেন- যে বিভাগগুলো আছে পূর্বে সবগুলোই বাংলায় লিখা  ছিলো। এখন গিয়ে দেখা যায় প্রায় অর্ধেকই ইংরেজিতে। এই যে ডিন, অফিস, বিভাগের নাম ইংরেজি শব্দগুলো আমরা বাংলা হরফে লিখছি, এটা তো বাংলাতেও লিখা যায়। আমি শুধু বাংলা লিখতে বলছি না, বাংলার সাথে আরো দুটি ভাষা লিখেন। 


বুধবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে নৃবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন । 

‘উত্তর ঔপনিবেশিক যুগে দক্ষিণ এশিয়ার উচ্চশিক্ষা’ বিষয়ক এই সেমিনারটি ওই বিভাগের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে তিনি বাংলা ভাষার বর্তমান অবস্থানও তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, ইংরেজিতে আমরা অফিস-চেয়ার বলছি। জানালা বলছি। পর্তুগিজ থেকে নিয়ে, অন্য ভাষা থেকে নিয়ে আলমারি বলছি। কিন্তু এখন উচ্চশিক্ষায় একটা বার্তা আমরা দিচ্ছি যে, ইংরেজি মাধ্যম ছাড়া হবে না। এটা ঠিক আছে।  

‘তাহলে এখন বাংলা ভাষা মাধ্যমের দায়িত্ব কে নিবে?’ 

তিনি আরও বলেন, আপনাদের ছাত্র বা শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বা চাকরির সুযোগ হয়েছে, এটা কিন্তু দুর্লভ সুযোগ।  এটাকে যদি আমরা ইংরেজির উন্নতির জন্যই শুধু ব্যবহার করি তাহলে তো হবে না। আমাদের আত্মউন্নতি হচ্ছে, তা ছাড়া ইংরেজীর উন্নতিও হচ্ছে, বাজার থেকে ইংরেজী বই কিনছি, পড়ছি। 

‘‘প্রশ্ন হচ্ছে এতিম বাংলা বা দেশীয় ভাষার উন্নয়নের জন্য বিশ^বিদ্যালয়গুলো কি অবদান রাখছে? তখন বলা হবে আপনাকে তো বাংলা লিখতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।’’ 

‘‘কিন্তু ওই ঘড়ির ফন্টগুলো দেখবেন ইংরেজীতে। এই ঘড়ির বাংলায় তৈরি করার প্রযুক্তি বা নিয়ম কি আমরা জানিনা? কিন্তু এটাতো আসমান থেকে ওহী নাজিল হয়ে আসেনি। এটাতো দেশের মানুষই তৈরি করেছে।’’ 

তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতি করার মতো বুদ্ধি বা সাহস সবই আমাদের আছে। কিন্তু বাংলার উন্নতির জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। 

অনুষ্ঠানে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আ ফ ম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক ড. চৌধুরী ফারহানা ঝুমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম। 

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, পলিট্যিাল স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / নোমান / ডি.আর