আওয়ামী লীগ বা বিএনপির সঙ্গে তো নয়ই, বড় কোনো দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রেম করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।

 


তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রেম দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে। আওয়ামী লীগ আর বিএনপির নীতিগত অনেক অমিল আছে। অনেক ইস্যুর কারণে তারা এক টেবিলে বসতে পারে না। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে তাদের মধ্যে চরিত্রগত কোনো অমিল নেই।

 

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

 

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুর্নীতি, দুঃশাসন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আর দলীয়করণের মাধ্যমে দেশের শান্তি শেষ করেছে। দেশের মানুষ তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দুটি দলের ওপর দেশের মানুষ বিরক্ত হয়ে আছে।

 

সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করা হয়েছে।

 

জাপা মহাসচিব বলেন, যিনি নির্বাহী বিভাগের প্রধান, তিনিই আইন সভারও প্রধান। আবার রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বিচার বিভাগও অনেকটাই তার হাতে। বিপুল ক্ষমতা একজনের হাতে থাকলে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে না। ভুল-ত্রুটিও বেশি হয়। একজনের হাতে সব ক্ষমতা থাকলে রাষ্ট্রের কোনো ক্ষেত্রেই জবাবদিহি থাকে না।

 

দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু মানুষ সুশাসন পায়নি উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রমাণ করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হেরে বিএনপি বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আবার ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।

 

তিনি বলেন, শুধু আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচনে শুধু প্রতীক থাকবে কোনো প্রার্থী থাকবে না। তাই এই নির্বাচনে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য হওয়ার সুযোগ থাকে না। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে দেশে আনুপাতিক হারে নির্বাচন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করবে। বর্তমান পদ্ধতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। ফেরেশতা নিয়োগ করলেও বর্তমান নিয়মের কারণে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।

 

জাতীয় পার্টিতে কোনো অনৈক্য নেই উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব আরও বলেন, কিছু নেতা চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না। জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং লাখ লাখ কর্মী-সমর্থক গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদেরের) ওপর আস্থা রাখে। দেশের সুশীল সমাজে জাতীয় পার্টি আস্থার অবস্থান সৃষ্টি করেছে।

 

তিনি বলেন, শৃঙ্খলঅ ভঙ্গের দায়ে বহিস্কৃত কেউ মামলা করলে জাতীয় পার্টির কোনো সমস্যা হবে না। জাতীয় পার্টি আদালতের ওপর আস্থাশীল। আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

 

বহিস্কৃতদের মধ্যে যারা ক্ষমার যোগ্য অপরাধ করেছেন তারা ক্ষমা চাইলে পার্টি চেয়ারম্যান বিবেচনা করবেন। কিন্তু যারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন, তাদের ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না, যোগ করেন মুজিবুল হক চুন্নু।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-১৭


সূত্র : জাগোনিউজ