স্পেনের মারিয়া ব্রায়াস মোরেরার বয়স ১১৫ বছর। নাতিপুতির মুখ দেখেছেন। এই বয়সেও দিব্যি সুস্থ–সবল আছেন তিনি। অবাক করা বিষয় হলো, শতবর্ষ পেরোনো এই নারীকে অসুস্থতা নিয়ে কখনোই হাসপাতালে যেতে হয়নি। খবর এএফপির।

 


গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ ছিলেন ফ্রান্সের লুসিল হান্দোঁ। গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের একটি নার্সিং হোমে ১১৮ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সিস্টার আন্দ্রেঁ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। লুসিলের মৃত্যুর পর এখন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের স্বীকৃতি পেতে পারেন স্পেনের মারিয়া।

 

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক রবার্ট ডি ইয়াং বলেন, মারিয়ার বয়স হয়েছে ১১৫ বছর। ফরাসি লুসিল হান্দোঁর মুত্যুর পর স্পেনের মারিয়াকে সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে পারে গিনেস কর্তৃপক্ষ।

 

আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে মারিয়াকে। গিনেস কর্তৃপক্ষ তাঁর বয়সের নথিপত্র যাচাই করবে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার নেবে। এরপরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

 

মারিয়ার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয়, ১৯০৭ সালের ৪ মার্চ। এর কিছুদিন আগেই তাঁর পরিবার মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়। ১৯১৫ সালে পরিবারটি তাঁদের আদি নিবাস স্পেনে চলে আসে। দুটি বিশ্বযুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে মারিয়ার।

 

বাবা মারা গেলে মায়ের সঙ্গে বার্সেলোনায় থিতু হন মারিয়া। স্পেনের গৃহযুদ্ধ শুরুর ৫ বছর আগে ১৯৩১ সালে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। চার দশক সংসার করার পর ৭২ বছর বয়সে মারিয়ার স্বামী মারা যান। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। স্বামী ও এক সন্তান মারা গেলেও ১১ জন নাতি আর ১১ জন পুতি নিয়ে মারিয়ার ভরা সংসার।

 

দুই দশক ধরে স্পেনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের ওলট শহরে বসবাস করেন মারিয়া।

সেখানকার সান্তা মারিয়া দেল তুরা নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বছরের পর বছর ধরে শহরটিতে বসবাস করছেন মারিয়া। কিন্তু চিকিৎসা নিতে তাঁকে কখনোই হাসপাতাল কিংবা নার্সিং হোমে যেতে হয়নি।

 

মারিয়ার সবচেয়ে ছোট মেয়ের নাম রোসা মোরেত। তাঁর বয়স ৭৮ বছর। মায়ের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে গতকাল বুধবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে রোসা বলেন, অসুস্থতা নিয়ে তাঁর মাকে কখনোই হাসপাতালে যেতে হয়নি। এমনকি তাঁর কখনোই হাড় ভাঙেনি। ব্যথায়ও ভোগেননি।

 

তবে ১১৩তম জন্মদিনের কয়েক সপ্তাহ পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মারিয়া। এরপরও হাসপাতালে যেতে হয়নি তাঁকে। রোসা জানান, করোনা হওয়ার পর বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েছেন তাঁর মা। পুরোপুরি সুস্থও হয়েছেন।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-১৬