কখনো সুপার স্টার্স, কখনো সিক্সার্স। আবার কখনো থান্ডার। বাহারি নামে দেশের ক্রিকেটের জমকালো আসর বিপিএলে এসেছে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু সাফল্য বলতে যা বোঝায়, তা কখনোই ধরা দেয়নি এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হাতের মুঠোয়।

তবে এবার পরিস্থিতি অন্যরকম। এবারের বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্স নামে আসা ফ্র্যাঞ্চাইজিটি এখন অবধি দারুণ পারফর্ম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বে সিলেট সাত ম্যাচের ছয়টিতেই পেয়েছে জয়।


সিলেট স্ট্রাইকার্সকে নিয়ে এবার তাই সিলেটজুড়ে অন্যরকম উন্মাদনা। টানা সাফল্যে থাকা শান্ত-মুশফিকদের দলটি ঘিরে তৈরি হয়েছে বাড়তি আগ্রহ। এরই রেশ বিপিএলের সিলেট পর্বে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম; এরপর ফের ঢাকা ঘুরে এবারের বিপিএল এখন সিলেটে। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সিলেট পর্ব। শুরুর ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নেমেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ‘ঘরের দল’কে সমর্থন দিতে গ্যালারিতে এখন ‘গোলাপি উৎসব’!

এবারের আসরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সির রঙ গোলাপি। দলকে সাহস জোগাতে দর্শক-সমর্থকরাও একই রঙের জার্সি পরে হাজির হয়েছেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর কিংবা দক্ষিণ, পূর্ব কিংবা পশ্চিম সবদিকের গ্যালারিতে গোলাপি রঙের ঢেউ। প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্সের সমর্থক যে একেবারেই নেই, তা নয়। কিন্তু তাদের সংখ্যার উপমা হবে ‘সমুদ্রের মধ্যে কয়েক ফোটা জলের’ মতো!

ম্যাচটি শুরু হয়েছে বেলা ২টায়। কিন্তু বেলা ১টার দিকেই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ছিল দর্শকদের উপস্থিতি। সময় যতো গড়িয়েছে, গ্যালারিতে দর্শক বেড়ে প্রায় পূর্ণ হয়েছে। দর্শক না বলে সরাসরি সিলেট স্ট্রাইকার্সের সমর্থক বলাই ভালো!

সিলেট স্ট্রাইকার্সকে নিয়ে যে বাড়তি আগ্রহ, এর পরিণতি কী? খেলা দেখতে আসা সমর্থকরা সরাসরি বলছেন এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা।

শিশির চক্রবর্তী নামের একজন বলছিলেন, ‘এবারের আসরের মতো এতো ভালো খেলা আর কোনো আসরে খেলতে পারেনি সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি। এবার দুর্দান্ত খেলছে দল। আমাদের প্রত্যাশা, দল এবার চ্যাম্পিয়ন হবে।’

খেলা দেখতে গোলাপগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা নেওয়াজ তালুকদার বলছেন মাশরাফির নেতৃত্বের কথা, ‘মাশরাফি বিপিএলের সফলতম অধিনায়ক। তিনি জানেন কিভাবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে সাফল্য বের করে আনতে হয়। তার নেতৃত্বে সিলেটও ভালো খেলছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা গেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা বলাই যায়।’

অবশ্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার কথা শুনলে দর্শক-সমর্থকদের খানিকটা হতাশই হতে হবে!

কাল সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়নের কথা যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, সেটা সময়ের ওপর ছাড়তে হবে। দল যেভাবে খেলছে, সেটা ধরে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দল হিসেবে আমরা চেয়েছি, সিলেট আগে যেরকম ছিল, সেখান থেকে বের হয়ে আসা এবং সিলেটের যে দর্শক আছে, তারা যেন দলটাকে আপন করতে পারে এবং সিলেট দলটা করতে পারে, সেই বিশ্বাস তৈরি করা। সেটা তৈরি হয়েছে। এরপর সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারলে সব কিছু নির্দিষ্ট দিনের ওপর নির্ভর করছে।’

সিলেট এবারের আসরে কতো দূর যাবে, তা সময়েই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে দর্শক-সমর্থকদের উৎসাহ, উন্মাদনায় যে ভাটা নেই, তা কিন্তু পরিষ্কার!

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে