রংপুরের উল্লাস।

গ্যালারিভর্তি দর্শক, গোলাপি রঙের উৎসব। ঘরের মাঠে জয়োল্লাসের মঞ্চ প্রস্তুত। কিন্তু হলো উল্টোটা। আচমকা ‘দর্শকচাপে’ পড়া সিলেট স্ট্রাইকার্স ঘরের মাঠে রীতিমতো বিধ্বস্তই হলো যেন। আসরজুড়ে দুর্দান্ত খেলে আসা মাশরাফির দল হঠাৎ করে যেন অচেনা হয়ে গেল আজ।

ধুঁকতে ধুঁকতে ৯২ রান তোলা সিলেট স্ট্রাইকার্স খুব বেশি চাপে ফেলতে পারেনি রংপুর রাইডার্সকে। ৪ উইকেট হারালেও মোটামুটি অনায়াসেই জয় তুলে নিয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল।


সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শুক্রবার বেলা ২টায় শুরু হয় ম্যাচটি।

স্বল্প রানের লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে রংপুর রাইডার্সের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। প্রথম বলেই সিলেটের পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরকে চার মেরে শুরু করেন নাঈম শেখ। অবশ্য শুরুর সাফল্য পরে আর ধরে রাখতে পারেননি নাঈম। ২১ বলে দুই চারে ১৮ রান করে বিদায় নেন সিলেটের ছেলে রেজাউর রহমান রাজার বলে।

মেহেদি হাসান বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাশরাফির বলে পেরেরার ক্যাচ হওয়ার আগে মেহেদি করেন ৮ রান।

মাশরাফির পরের বলেই টম মুরসের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ফিরে যান শোয়েব মালিক। ৪৪ রানে রংপুর রাইডার্স ৩ উইকেট হারানোর পর ম্যাচ খানিকটা জমে ওঠার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু তা হতে দেননি রনি তালুকদার ও মোহাম্মদ নেওয়াজ। ৩৮ বলে দুটি করে চার-ছয়ে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার রনি। ১৩ বলে এক চার ও দুই ছয়ে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন নেওয়াজ।

মধ্যখানে আজমতউল্লাহ ওমরজাই বিদায় নিলেও ১৫.৪ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে রংপুর রাইডার্স।

৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে মাশরাফি নেন ২ উইকেট। ৩.৪ ওভারে ২৩ রানে রাজার উইকেট ১টি, ৪ ওভারে ২৬ রানে আমিরের উইকেট ১টি।

দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে রংপুরের ওমরজাইয়ের হাতে।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এর পরের চিত্রটা কেবলই আসা-যাওয়ার!

৪ রানে টম মুরসকে হারানো সিলেটের স্কোর ১২ রানে থাকতে থাকতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম আর জাকির হাসান! ১৮ রানে নেই হয়ে যায় সিলেটের ৭ উইকেট!

বিপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৪৪ রানে আটকে পড়ার রেকর্ড খুলনার; ২০১৬ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আজ সর্বনিম্ন রানে আটকে যাওয়ার ভয় চেপে ধরেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। তা হতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব আর মাশরাফি। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে লড়াই করেন এ দুজন। গড়েন ৪৮ রানের জুটি। হাসান মাহমুদের বলে রবিউল হকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে মাশরাফির বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। ২১ বলে দুই ছক্কায় ২১ রান করেন দলনায়ক।

সাকিব তখনও লড়ে যাচ্ছিলেন। খানিক পরে তিনিও ফিরে যান হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হয়ে। তবে ফেরার আগে ৩৬ বলে পাঁচ চার আর দুই ছয়ে ৪১ রান করে দলকে শত রানের কাছাকাছি যাওয়ার পথ করে দেন সাকিব।

২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ৯২ রান দাঁড়ায় সিলেটের স্কোর।

হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ১২ রানে ৩টি, আজমতউল্লাহ ওমরাজাই ৪ ওভারে ১৭ রানে ৩টি, মেহেদি হাসান ৪ ওভারে ১২ রানে ২টি আর হারিস রউফ ৪ ওভারে ১৯ রানে নেন ১ উইকেট।

৮ ম্যাচে দ্বিতীয় হারের পরও সিলেট স্ট্রাইকার্স বিপিএলে এখনও শীর্ষে আছে পয়েন্ট টেবিলে। ৭ ম্যাচে ৪ জয়ে রংপুর আছে চতুর্থ স্থানে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে