সুনামগঞ্জের শাল্লায় আনন্দপুর বড় খালের বেড়িবাঁধের সরকারিভাবে লাগানো গাছগুলো কেটে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত করায় ছায়ার হাওর উপ প্রকল্পের আওতায় ২২নং পিআইসি কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

 


২৯ জানুয়ারি (রবিবার) দুপুরে আনন্দপুর সহ এলাকাবাসীর উদ্যোগে আনন্দপুরের বড় খালের ছায়া হাওর উপ-প্রকল্পের ২২নং পিআইসির বাঁধে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

উক্ত মানববন্ধন বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও আব্দুল আজিজ মিয়া তালুকদারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য কালাই মিয়া তালুকদার।

 

আরও বক্তব্য রাখেন- ব্যবসায়ী ও এলাকার সবচেয়ে অধিক পরিমান জমির মালিক কৃষক গরমোহন রায়, মৃৎশিল্পী অরবিন্দু পাল, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিহির কান্তি রায়, কৃষক সুশীল শীল, রবীন্দ্র বিশ্বাস, অমর চাঁদ দাশ, বাবুল দাশ, অঞ্জন দাশ, বকুল দাশ ও কলেজ শিক্ষার্থী জুয়েল রায় প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, ২০১১ সালে সওজ (সড়ক ও জনপদ) বিভাগের উদ্যোগে এই বাঁধে দিরাই শাল্লা রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি ফেলেছিল। দীর্ঘ ১২ ধরে এই বাঁধটি  অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। বাঁধের পূর্বপাশে সারিবদ্ধভাবে সরকার কর্তৃক লাগানো অর্ধশত মেন্ডা (পিটুলি গাছ) ফলন্ত বড়ই ও অন্যান্য গাছ ছিল।

 

কিন্তু ছায়ার হাওর উপ প্রকল্পের আওতায় ২২নং পিআইসি কমিটি লোকজন এসব গাছগুলো কেটে ফেলেছে। বাঁধের মধ্যে অবস্থিত গাছগুলো কেটে ফেলায় বাঁধটিকে ভবিষ্যতে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে ওই পিআইসি কমিটি।

 

বক্তারা আরও বলেন বাঁধের আরও ক্ষতি করেছে বাঁধের দুই পাশের মধ্যভাগে বাঁশের আড়ি দিয়ে। বাঁশের গোড়া পচে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হবে। এই বাঁধের গোড়ায় সামান্য ভাঙার সৃষ্টি হলে কোটি টাকা দিয়েও বাঁধ রক্ষা করা যাবে না। এখন বাঁধে যেভাবে কাজ করা হচ্ছে তা খাল কেটে কুমির ডেকে আনার মত। এই বাঁধে পিআইসি কমিটি সামান্য মাটি ফেলে দায়সারাভাবে নিম্নমানের কাজ করে মোটা অংকের অর্থ লাভ করতে চাইছে। প্রকৃতপক্ষে ওই বাঁধে কোনো প্রকল্পেরই প্রয়োজনই ছিল না।

 

তবুও এখানে হাওরের ফসলরক্ষার নামে বাঁধ মেরামতের জন্য প্রকল্প দেওয়া হয়েছে ২০লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অথচ মাদারিয়া ব্রিজের উত্তর অংশসহ মাটির কাজ করা হয়েছে মাত্র ২থেকে ৩লাখ টাকার। বাঁধের মধ্যে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলায় ও নিম্নমানের কাজ করে অক্ষত বাঁধের ক্ষতি করায় ২২নং পিআইসি কমিটির বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী।

 

মানববন্ধনে এলাকার কৃষক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাবেক জনপ্রতিনিধি সহ সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা ও উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আবনা গাছ ছিলো বাঁধে। তারপরও বাঁধে গাছ লাগানো হবে।

 

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, বাঁধের সবগাছ কেটে থাকলে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবো।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/সন্দীপন/এসডি-১২