সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনেরা এখন শতভাগ স্বাস্থ্য ও জীবনবীমার আওতায় এসেছে। প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ বীমা কার্যক্রম চালু করে কর্তৃপক্ষ। তবে এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

 


কেউ কেউ বলছেন, প্রচারণার অভাবে শিক্ষার্থীরা এখনো এ বিষয়ে অবগত নন। কোন প্রক্রিয়ায় বীমার জন্য আবেদন করতে হয় সেটাও জানেন না তাদের অনেকেই। 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত ২০১৯ সালে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য স্বাস্থ্য ও জীবনবীমা চালু করা হয়। এর চার বছর পর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীদেরকে স্বাস্থ্য ও জীবনবীমার আওতায় আনা হয়েছে। গত ২৩ এপ্রিল কর্মচারীদের জন্যও এই সেবা চালুর করে কর্তৃপক্ষ। এখন শতভাগ স্বাস্থ্য ও জীবনবীমার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনেরা। 

 

জানা যায়, ২০২৩ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর ওই সেবা শিক্ষার্থীদের জন্য চালুর ক্ষেত্রে প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় শাবি। প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এ সেবার আওতায় আসে। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা পাবেন। সেবা নিতে শিক্ষার্থীদেরকে একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বরের নোটিশে এবং চুক্তিসভায় বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভগীয় প্রধানদের অবহিত করা হয়। কিন্ত কেউ তেমনভাবে শিক্ষার্থীদেরকে জানানোর উদ্দেশ্যে কাজ করেননি। তাই গত অর্ধবছরে মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবীমার সুবিধা নিতে পেরেছেন। অথচ বিশ^বিদ্যালয়ে তিন বর্ষে মিলে আনুমানিক সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। 


এদিকে, গত ২৩ এপ্রিল ২০২২-২৩ শিক্ষার্থীদেরকেও এই সেবার আওতায় আনা হয়েছে। এতে করে চার বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা নিতে পারবেন। 

 

প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রয়েছে। আগামীতে এ মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে; কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা প্রিমিয়াম প্রদান করা হয়েছিল। সেবা গ্রহীতার পরিমাণ কম হলে প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি সেই টাকা ফেরত দিবেন। 


বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, অনেকেই এ বিষয়ে অবগত নন। আবার অনেকেই জানেননা কিভাবে সেবা নিতে হয়। তাই ছয়মাস পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবীমার সুবিধা নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহও দেখা যায়নি। 

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদেরকে অবগত করতে বিভাগগুলোকে আমরা আবারও চিঠি দিব। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।’ 

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সিলেট ভিউ’কে বলেন, ‘বীমার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা সকলেই অবগত নয়, বিষয়টি দুঃখজনক।’

 

 এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি। শিক্ষার্থীদেরকে অবহিত করতে প্রচারণায় জোর দেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য। 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নোমান