একটি সভায় যোগ দিতে বুধবার বীরভূমে এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে গিয়েও নিজস্ব মেজাজে ধরা দিলেন তিনি। সভা শেষে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে ঢুকে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। সবাই তখন ভেবেছিলেন তিনি চা পান করতে ঢুকেছেন। অথচ দেখা গেল নিজের হাতে বানিয়ে ফেললেন চা। সঙ্গে খোঁজ নেন দোকানদারের পরিবারের। সবাইকে চা খাইয়ে মেটালেন বিলও!

বুধবার বীরভূমের সভা শেষে সরকারডাকা গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় একটি গ্রাম ঘুরে দেখেন। তারপর সেখানে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তখনই চা বানিয়ে নিজের হাতে সবাইকে খাওয়ান। তাতে আনন্দের মুহূর্ত তৈরি হয় সেখানে। আমলা থেকে নিরাপত্তারক্ষী— সবাইকে নিয়েই ওই চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন মমতা।


এদিকে এত জনের চা, তার উপরে দোকানে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং চা বানাচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে খানিকটা ঘাবড়েই যান তরুণী চা বিক্রেতা। আসলে তিনি কখনো ভাবতে পারেননি তার দোকানে গিয়ে চা বানাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেই দোকানির কাছ থেকে চা, চিনি, দুধ চেয়ে নেন মমতা, তারপর উনুনে বসিয়ে দেন চা।

চা ফুটে ওঠার ফাঁকে তরুণী চা দোকানিকে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, ‘‌তোমরা রেশন পাও? বাচ্চারা পড়াশোনা করতে যায়? তোমাদের ঘর কোথায়?’‌ মুখ্যমন্ত্রীর সব প্রশ্নের উত্তর দেন ওই তরুণী। শেষে পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রী তরুণীর মাথায় হাত রাখতেই দু‌চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে আসে চা দোকানির। তখন মনে শুধুই আনন্দ।

তারপর ঠিক কী করলেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ অন্যদিকে সবাই মিলে চা খাওয়ার পর শেষে মেটানো হয় চায়ের বিল।

মমতা জিজ্ঞাসা করেন, ‘‌কত হলো বিল? এই ওকে ১০০ কাপ চায়ের পয়সা দাও। এই তোমার ঘর দেখাও। দেখি কোথায় থাকো।’ তারপর নিজেই পর্দা সরিয়ে দেখেন কাঁচা বাড়ির ঘর। খাবারের হাঁড়ি। মুখ্যমন্ত্রীকে এত কাছে পেয়ে রীতিমতো আনন্দে মেতে ওঠেন চা দোকানি এবং এলাকার মানুষ। যাওয়ার সময় বলে যান, ‘‌চিন্তা করো না। আমি তো আছি।’‌

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/ইআ-০৪