সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে মার্কেট বানানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। নিজেদের প্রায় চার একর জায়গার ওপর এই মার্কেট নির্মাণ করবে তারা।

মার্কেট নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।


বাদাঘাটের ওই চার একর জায়গায় আজ রোববার সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালায় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। অভিযানে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।

জানা গেছে, বাদাঘাট বাজারে প্রায় ১৮ বছর আগে জেলা পরিষদের চার একর জায়গা একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। একসনা লিজ অনুসারে এক বছর পর জায়গা জেলা পরিষদের আওতায় চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। যারা লিজ নিয়েছিলেন, তারা নবায়নও করেননি। গত প্রায় দেড় যুগ ধরে সেখানে স্থায়ীভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি এ জায়গার বিষয়টি জেলা পরিষদের নজরে আসে। জায়গা উদ্ধারে স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের সাথে বৈঠক করা হয়। পরে দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নিতে নোটিস ও নির্দিষ্ট সময় প্রদান করা হয়। নোটিসের পর অনেকেই নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। তবে অনেকেই সেখানে রয়ে গিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে বুলডোজার নিয়ে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যও অংশগ্রহণ করছেন। অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ীকে নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এ অভিযানে আধাপাকা ও টিনের প্রায় ৭০টি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাদাঘাট বাজারের ওই জায়গায় স্থায়ীভাবে একটি মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে সম্প্রতি জেলা পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে মার্কেট নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়। মন্ত্রণালয় সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে।

সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ সিলেটভিউকে বলেন, ‘জেলা পরিষদের মাসিক সভায় এখানে একটি মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মার্কেট নির্মাণের অনুমোদন মিলেছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলা পরিষদের মার্কেট নির্মিত হলে বাজার থেকে যেসব ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদেরকে সেখানে পুনর্বাসন করা হতে পারে।

উচ্ছেদ অভিযানে বিষয়ে মোস্তাক আহমদ পলাশ সিলেটভিউকে বলেন, ‘এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল এবং এখানে দোকানপাট নির্মাণের কোনো বিধিবিধান ছিল না। তারপরও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘একসনা লিজের শর্ত অনুসারে, কোনো অবস্থায় লিজকৃত জায়গায় স্থায়ীভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। এসব শর্তাবলি কেউ লঙ্ঘন করলে লিজ আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়। এসব শর্ত রেখেই এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লিজের শর্ত ভঙ্গ করে এখানে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়।’

পলাশ জানান, স্থানীয়রা অভিযানে কোনো বাধা দেননি। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অভিযানে সহযোগিতা করেছেন।

তিনি জানান, উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হবে।

এদিকে, বাদাঘাট বাজারে থাকা একটি মসজিদের জন্য জেলা পরিষদের জমি চান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বলেন, ‘জেলা পরিষদের জায়গার নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুসারে বাজার এলাকায় থাকা মসজিদকে জমি দান করা হবে, আর্থিকভাবেও সহযোগিতা করা হবে। এ মসজিদের নাম হবে জেলা পরিষদ-বাদাঘাট বাজার মসজিদ।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে