সাপ্তাহিক মজুরি ও রেশন বন্ধসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন যাবত মানবেতর জীবন যাপন করছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগান শ্রমিকরা। প্রথমে বাগান থেকে ছোট খাটো আন্দোলন শুরু করলেও পরে তারা ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষাভ করে।
কিন্তু তাতেও কোন প্রকার সামাধান না হওয়ায় এবার হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসককের কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একই সাথে চা-শ্রমিকদের দাবীদাবা নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার বিকেল ৩ টা থেকে শতাধিক চা শ্রমিক এ বিক্ষোভে অংশ গ্রহন করে।
চা-শ্রমিকরা জানান, ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগান শ্রমিকদের বকেয়া বোনাস গত ৩ সপ্তাহ যাবত বন্ধ রেখেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, মজুুরি ও রেশন ও বন্ধ রেখেছে তারা। এছাড়াও বাগানের পতিত জমি বহিরাগত লোকদের লীজ হিসেবে প্রধান করেছে। এরই প্রেক্ষিতে চা শ্রমিকরা দিনের পর দিন আন্দোলন করলেও কোন সমাধান হচ্ছে না। গত ৩ ফেব্রুযারী মঙ্গলবার ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসের পরও কোন সমাধান হয়নি। তাই এবার বাধ্য হয়েই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার ছেয়ে ইমাম বাওয়ানী চা বাগানের পঞ্চায়েত চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে স্মারক লিপি দেয়া হয়েছে।
অকিল ঝড়া নামে এক নারী চা শ্রমিক জানান, আমারা অসহায় চা শ্রমিক। সারা দিন কাটুনির পর সামান্য যে পরিমান টাকা পয়সা পাই তাই দিয়ে সংসার চলে আমাদের। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবত আমাদের উপর অত্যাচার শুরু করেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। তারা আমাদের বেতন ও বোনাসসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন কিভাবে আমরা সংসার চালাবো তা বুঝতে পারছি না।
কোকিলা বাখতি নামে অপর নারী চা শ্রমিক জানান, কেন আমাদের সাথেই বার বার এমনটা হয়। একদিকে বেতন ভাতা ও রেশন পাচ্ছি না। আবার অন্যদিকে বাগানও বন্ধ করে দিয়েছে বাগান কর্তৃৃপক্ষ। আমাদের এখন না খেয়ে মরতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ঘরে এখন কিছুই নাই। আমাদের পানি আর লাল চা খেয়েই বাঁচতে হবে।
ইমাম চা বাগানের পঞ্চায়েত প্রধান ভজন রবি দাশ জানান, অনেক দিন যাবত আমাদের বাগান কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে দেনা পাওনা টালবাহানা করছে। আমাদের বেতন ভাতা ও রেশন বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা বাগানের অফিসও বন্ধ করে রেখেছে। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে এসেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় যদি আমাদের সুষ্ঠ সমাধান না দেন তা হলে বাচ্চাখাচ্চা নিয়ে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / জাকারিয়া / ডি.আর/এসডি-২৭