সিলেটের ওসমানীনগরে এক মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসার সুপার কর্তৃক বলৎকারের ঘটনা ঘটে ৮ মাস আগে। ঐ ঘটনার ৮ মাস পর অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। 
 

গ্রেফতারকৃত মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদির জেলার কানাইঘাট উপজেলার লন্তির মাটি গ্রামের মৃত নূরুল হকের ছেলে। তিনি উপজেলার সাদিপুর ইউপির নুরপুর দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা সুপারের দ্বায়িত্বে ছিলেন। গত শনিবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত মাদ্রাসা সুপারকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 



এদিকে, ঘটনার পর অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপারকে পালিয়ে যেতে সাহায্যসহ ধর্ষনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিতে বাধা দেওয়ায় ও সালিশি বৈঠকে বলৎকারের ঘটনা ধামাচাপার বিষয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে গত শনিবার (২৫ফেব্রুয়ারী) ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিত ছাত্রের পিতা।

গ্রেফতার আব্দুল কাদিরসহ মামলায় অনান্য আসামীরা হলেন, নূরপুর গ্রামের আহমদ উল্লার পুত্র আফতাব উল্লাহ, আমান উল্লাহর পুত্র আবিদ উল্লাহ, আফিজ উল্লাহর পুত্র ইয়াওর মিয়া, বশিরুজ্জামানের পুত্র তজম্মুল আলী, বশিরুজ্জামানের পুত্র  কাপ্তান মিয়া, নূরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম জসিম উদ্দিন, মুয়াজ্জিন মাহমুদুল হাসান, ফিরোজ উল্লাহর পুত্র আনছার মিয়া, কবির মিয়ার পুত্র কামরুল, তজম্মুল আলীর পুত্র রুবেল, আবিদ উল্লাহর পুত্র সামসুদ্দোহাসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২জন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন উপজেলার নুরপুর দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার সুপারের দ্বায়িত্বে থাকাকালে হিফজ বিভাগের ১১ বছরের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বলাৎকার করে মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদির। বিষয়টি নির্যাতিত শিশু তার বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজনকে অবহিত করলে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা মাদ্রাসার কমিটিসহ গ্রামের মাতাব্বরকে অবহিত করেন। তাৎক্ষণিকভাবে নির্যাতিত শিশুকে উপজেলার তাজপুরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। 
 

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে মাদ্রাসা কমিটিসহ গ্রামের কয়েকজন মাদ্রাসার অফিসে গিয়ে আব্দুল কাদিরকে সবার সামনে ৩০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে তার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা মুচলেকা আদায় করা সালিশি বৈঠক সমাপ্ত করেন। উপস্থিত কয়েকজন এই বিষয়ের প্রতিবাদ করলে একজন শিক্ষকের মাধ্যমে সুপার আব্দুল কাদিরকে গড়িতে তুলে পালিয়ে যেতে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। সালিশের মাধ্যমে রফাদফা হওয়া ২ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও তখন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার ৮মাস পর গত শনিবার ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতার পিতা। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এস আই সবিনয় বৈদ্য বলেন, নির্যাতিত ছাত্রের পিতার মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে আব্দুল কাদিরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 
 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/রনিক/পল্লব-১৭