মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেছেন, ‘সহমর্মমিতা নয়, সম্মানের দৃষ্টিতে নারীদের দেখতে হবে। প্রযুক্তিতে নারীদের কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় তা ভাবতে হবে। নারী পুরুষের আলাদা আলাদা ভূমিকা সমাজ কর্তৃক অর্পিত। এ ধারণার পরিবর্তন দরকার। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে। এ মুহুর্তে ভাবতে হবে প্রযুক্তিতে নারীদের প্রবেশাধিকার কতটুকু।
সোমবার সকালে বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রফেসর এম হাবিবুর রহমান হলে অনুষ্ঠিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক আরও বলেন, ‘আজ নারীরা অনেক এগিয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকার ও এনজিওসহ সমাজের বিভিন্ন মহলের অবদান আছে। মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি শুরু থেকেই ছাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে আসছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর এমও রহমান চৌধুরীর স্বপ্ন হচ্ছে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি যাতে নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখে। আমরা সে স্বপ্ন পূরণে সচেষ্ঠ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান বলেন, নারীবাদী চিন্তাভিাবনা দিয়ে নারী নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটা কোনও বিচ্ছিন্নতা নয়, একটা স্বপ্ন। নারী শুধু নারী নয়, মানুষও। প্রযুক্তির সকল উদ্ভাবনে নারীদের সম্পৃক্ত করা সময়ের দাবী। এজন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। আর আমাদের শুধুই শিক্ষা নয়, প্রযুক্তিগত শিক্ষা প্রয়োজন।
ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তাহোরা খাতুন ও সিএসই বিভাগের প্রভাষক চৌধুরী মুজাদ্দিদ আহমেদের সঞ্চালনা এবং বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিহির কান্তি চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্য দিয়ে সকাল দশটায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন, ট্রেজারার প্রফেসর ড. সুরেশ রঞ্জন বসাক, বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. রমা ইসলাম, স্কুল অব বিজনেস এন্ড ইকনোমিকস্ এর ডিন প্রফেসর ড. মো. তাহের বিল্লাল খলিফা, স্কুল অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল হক চৌধুরী, ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী মোকাম্মেল ওয়াহিদ, প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধানবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
সেমিনারে জেন্ডারভিত্তিক বিষয়কে অবলম্বন করে চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. রমা ইসলাম, রেজিস্ট্রার তারেক ইসলাম, সিএসই বিভাগের ছাত্রী খুলুদ বিনতে হারুণ ও ট্রান্সজেন্ডার ছাত্রী সাহারা চৌধুরী।
বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী, প্রবন্ধ উপস্থাপক ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে পুরষ্কার ও সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়। ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক ট্রান্সজেন্ডার ছাত্রী সাহারা চৌধুরীর হাতে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর এমও রহমান চৌধুরীর পক্ষ থেকে বিশেষ স্কলারশিপ সনদ প্রদান করেন। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে একটি স্মারকও প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।
এছাড়া সফল নারী হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. দিলারা রহমানকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন এমইউ ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। এর আগে সকাল সাড়ে নয় টায় এক বর্ণাঢ্য র্যা লির মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। র্যা লিতে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক ও প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন।
উদ্বোধন করেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. সুরেশরঞ্জন বসাক।
উদ্বোধনকালে প্রফেসর ড. সুরেশরঞ্জন বসাক বলেন, নারীপুরুষের বৈষ্যম্য দূর করে সমাজে সমতা বিধান করতে হবে। নারীরা যেন তাঁদের যোগ্যতা ও মেধার যথাযথ মূল্যায়ন পান সেদিকে সকলকে আন্তরিক হতে হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। এদিন পবিত্র শব-ই-বরাত উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি থাকায় ৬ মার্চ দিবসটি পালিত হয়।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-১১