সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অতি পবিত্র ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম মহাপীঠ ‘শ্রীশ্রী মহালক্ষ্মী ভৈরবী গ্রীবা মহাপীঠে’ ৪ দিনব্যাপি বার্ষিক পূজানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
 

এই পূজানুষ্ঠান সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি জৈনপুরস্থ ‘শ্রীশ্রী মহালক্ষ্মী ভৈরবী গ্রীবা মহাপীঠ মন্দিরে’ অনুষ্ঠিত হবে।
 


অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে- ২৮ মার্চ মঙ্গলবার মহাসপ্তমীর দিন সকাল ৮টায় মায়ের বিহিত পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, চণ্ডীপাঠ, ভোগরাগ, ভোগারতি ও অনুকল্প প্রসাদ বিতরণ।
 

২৯ মার্চ বুধবার মহাঅষ্টমীর দিন সকাল ৮টায় মায়ের বিহিত পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, চণ্ডীপাঠ, ভোগরাগ, ভোগারতি ও অনুকল্প প্রসাদ বিতরণ, দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হরিনাম সংকীর্ত্তন। পরদিন ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার মহানবমীর দিন সকাল ৮টায় মায়ের বিহিত পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, চণ্ডীপাঠ, ভোগরাগ, ভোগারতি, দুপুর ১টা থেকে মহাপ্রসাদ বিতরণ, দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মাতৃবন্দনা ও হরিনাম সংকীর্ত্তন। অষ্টমী ও নবমীতে নামসুধা পরিবেশন করবেন বিনয় সূত্রধর, বিদ্যুৎ দাস, সৌরভ পুরকায়স্থ শাওন ও ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য্য। ৩১ মার্চ শুক্রবার মহাদশমী দিনের পূজা শেষে অনুষ্ঠান সমাপন।
 

‘শ্রীশ্রী মহালক্ষ্মী ভৈরবী গ্রীবা মহাপীঠে মন্দিরে’ ৪ দিনব্যাপী বার্ষিক পূজানুষ্ঠানে সর্বস্তরের ভক্তঅনুরাগীদের উপস্থিত থাকার জন্য কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি শিবব্রত ভৌমিক চন্দন ও সাধারণ সম্পাদক জনার্দন চক্রবর্তী মিন্টু বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
 

উল্লেখ্য, সত্যযুগে দক্ষ রাজা কর্তৃক যজ্ঞানুষ্ঠানে দেবাদীদেব মহাদেবকে আমন্ত্রণ না করায় এবং পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে দক্ষকন্যা সতীদেবী দেহত্যাগ করলে মহাদেব সেই সংবাদ শুনে মৃত সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে প্রলয়নৃত্য শুরু করেন। এ অবস্থা ব্রহ্মাদি দেবগণ উপলব্ধি করে সৃষ্টি রক্ষা করার জন্য শ্রী বিষ্ণুর শরণাপন্ন হলে শ্রী বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা মহাদেবের স্কন্দে থাকা সতীদেহকে ৫১টি খণ্ডে খণ্ডিত করে ভূমিতে পতিত করেন এবং মহাদেবকে ধ্বংসলীলা থেকে নিবৃত্ত করেন।
 

সতীদেবীর ৫১টি দেহখণ্ড ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, তিব্বত ও শ্রীলংকার বিভিন্ন স্থানে পতিত হয়। এই ৫১টি দেহখণ্ড যেসব স্থানে পতিত হয় সেইসব স্থান এক একটি পীঠস্থান তথা তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত হয়ে বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়। সিলেট শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পশ্চিম পাশে জৈনপুর গ্রামে সত্যযুগের সেই দিনে সতীদেবীর ৫১টি দেহখণ্ডর ১টি দেহাংশ (গ্রীবা) পতিত হয়েছিল। ফলে উক্ত স্থানটি গ্রীবামহাপীঠ নামে পরিচিতি লাভ করে।
 

এখানে অধিষ্ঠাত্রী দেবীর নাম ‘শ্রীশ্রী মহালক্ষ্মী ভৈরবী।’ অনতিদূরে ঈশান কোণে গোটাটিকর গ্রামে ‘সর্ব্বানন্দ ভৈরব’ নামে পীঠরক্ষী শিবমন্দির অবস্থিত।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-২৭