জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে (জেসিপিএসসি) যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস- ২০২৩’ উদযাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে শেখ রাসেল দেয়ালিকায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বাণী প্রদর্শন এবং তাঁর তেজোদীপ্ত বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানে প্যাস্টুন চিত্রিত হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী ও বর্ণিল জীবন এবং ৭মার্চের ভাষণের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মো. কুদ্দুসুর রহমান, পিএসসি। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ মো. আবদুল হান্নান, শিক্ষকমণ্ডলী, আমন্ত্রিত অতিথি, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা আদিবা অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের করেন এবং খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বক্তব্য উপস্থাপন করেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিন আল সাবাহ, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনাদর্শ তুলে ধরেন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার ভুঁইয়া এবং স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বক্তব্য তুলে ধরেন প্রভাষক মোঃ ফাহিম উদ্দিন। তাদের বক্তব্যে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনালেখ্য, তাঁর স্বদেশ প্রেম, ন্যায় প্রতিষ্ঠার অদম্য সংগ্রাম, পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিবাদ এবং স্বাধীন বাংলাদেশ রচনার মাহানায়কীয় অনবদ্য অবদান চিত্রিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, দূরদর্শী রাজনৈতিক চিন্তন, শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করণ ও শিশুদের জন্য বাসযোগ্য সোনার বাংলা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার গল্পও ফুটে ওঠে। জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে শিশুর স্বাস্থ্য সচেতনতা, পুষ্টি ও খাদ্য বিষয়ক আলোচনা উপস্থাপন করেন গার্হস্থ্য বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মেহেতারীন শারমিন।
অধ্যক্ষ মহোদয় তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি মহাকাব্যিক ইতিহাসের নাম। তিনি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের আলোকবর্তিকা ও চিরঞ্জীব নেতা। তাঁর জন্ম যেন শিখাময় দ্রুপদি কল্পকাহিনী। আজ তাঁর ১০৩তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ ভাবনা, জাতির উন্নতি, অন্যায় শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে অভিরাম সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন- আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কর্মব্যস্ত জীবনে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে বঙ্গবন্ধু শিশুদের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন। তোমরা তরুণ প্রজন্ম, জাতির ভবিষ্যৎ; তোমাদেরকে এই মহান নেতার আদর্শ থেকে দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করতে হবে। যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে; তাদের মাঝেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকবেন। তাই তোমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর এমন আদর্শে উজ্জীবিত হতে হবে। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে হতে হবে সুশিক্ষিত, সুদক্ষ, সুনাগরিক এবং সৃজনশীল আলোকদীপ্ত মানুষ। আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’
অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় করেন উপাধ্যক্ষ এবং আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী অধ্যাপক রহমতুন্নেছা কোরেশী। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহরিমা তাবাসসুম তমা ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শান্তনু পাল নিলয়ের সঞ্চালনায় এবং শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনায় অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের সাথে ফটোসেশনে অংশ নেন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও অনুষ্ঠান বাস্তবায়নকারী সদস্যবৃন্দ।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত