মশা মারতে ‘কামান দাগা’র গল্প এতদিন শুনার পর এবার জানা গেলো- সিলেটে মশার বিপক্ষে বাড়ানো হচ্ছে ‘সৈন্য’ অর্থাৎ- জনবল। মহানগরে মশা নিধনে অর্ধশতাধিক লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলেন জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সিলেট মহানগরে কখনো ফগার মেশিন দিয়ে, আবার কখনো স্প্রে মেশিন দিয়ে ছিটানো হচ্ছে মশা মারার ঔষধ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও চলে নিয়মিত। কিন্তু এতো আয়োজনের পরও সিলেটে কমছে না মশার উপদ্রব। তবে এ ক্ষেত্রে সিসিকের জবনল সংকটকে বড় করে দেখাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন- শীঘ্রই সিসিকের এ শাখায় বাড়ানো হচ্ছে জনবল। গত সোমবার (২০ মার্চ) নগরভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জনবল বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টি সিলেটভিউ-কে জানিয়েছেন সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।
সিলেট মহানগরের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মশা। নগরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মশার উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। গেল কয়েক মাস থেকে ঔষধ ছিটানো না হওয়ায় নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। মশার উপদ্রব বাড়ায় দিনের বেলায় ঘুমাতে গেলেও নগরবাসীকে টানাতে হচ্ছে মশারি। মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নগরীতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে।
মশক নিধনে সিটি করপোরেশনও নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে হলে সারাবছরই নগরীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাতে হয়। বিশেষ করে মশার প্রজননের মৌসুমে ১০ দিন অন্তর অন্তর একযোগে পুরো নগরীতে মশার ঔষধ ছিটাতে হবে। এভাবে দুইমাস ঔষধ ছিটানো গেলে মশার বংশ বৃদ্ধি কমে আসবে। নগরবাসীও মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাবেন।
সিসিকের স্বাস্থ্য শাখা সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে (বর্ধিত নতুন ১২টি ওয়ার্ড ছাড়া) একযোগে ঔষধ ছিটাতে হলে অন্তত ১৫০ জন কর্মী প্রয়োজন। কিন্তু এই কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের কোন জনবল নেই। মাত্র দুইজন স্প্রে ম্যান রয়েছেন। তাই কখনোই একযোগে পুরো নগরীতে ঔষধ ছিটানো সম্ভব হয় না। একেক ওয়ার্ড করে ঔষধ ছিটাতে গেলেও বাইরের দিনমজুরের উপরের ভরসা রাখতে হয়। অনভিজ্ঞ কর্মীরা ঠিকমতো ঔষধ ছিটাতেও পারে না। এছাড়া একেক ওয়ার্ড করে ঔষধ ছিটানোর পর মশা পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলে যায়। যে কারণে মশক নিধন সম্ভব হয় না। ফলে মশার বংশবৃদ্ধি কমছে না। তাই ঔষধ ছিটিয়েও ফল মিলছে না।
তবে অবশেষে সিসিকের এ শাখায় জনবল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে নগরভবনে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ডা. জাহিদুল ইসলাম সিলেটভিউ-কে বলেন- মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সোমবার নগরভবনে সভা আহ্বান করা হয়েছিলো। সভায় সবার সম্মতিক্রমে এ শাখায় ৬০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে একযোগে পুরো নগরে অভিযান করা যাচ্ছে না। ফলে ঔষধ ছিটিয়েও কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। নতুন যাদের নিয়োগ দেওয়া হবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে নামনো হবে। এরপর আশা করি নগরবাসী মশার যন্ত্রনা থেকে অনেকটা মুক্তি পাবেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডালিম/পল্লব-২৩