শঙ্কাই সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। গত লোকসভা নির্বাচনে জয় পেয়ে তিনি কেরালা রাজ্যের ওয়ানাডের থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।  


শুক্রবার (২৪ মার্চ) ভারতের লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, কেরালার ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ বাতিল করা হয়েছে। এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে সাংসদ রাহুল গান্ধী, রাষ্ট্রপতির সচিবালয়, এবং কেরালার রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের মুখ্য নির্বাচনী অফিসে।


এদিন এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে দিল্লিতে পথে নেমেছে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বামদল, জেডি (ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আমআদমি পার্টি (আপ)। সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তারা।

বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে, মোদি পদবি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করছে ভারতের নিম্ন আদালত। তার পরেই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। যদিও ৩০ দিনের জামিন পেয়েছিলেন রাহুল। কংগ্রেসও তোড়জোড় শুরু করেছিল উচ্চ আদালতে যাওয়ার। কিন্তু, তারইমধ্যে এদিন বেলা গড়াতেই খারিজ হলো সাংসদ পদ।

প্রসঙ্গত, এই আইনের নেপথ্যে ২০১৩ সালের ১০ জুলাই, দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের এক যুগান্তকারী রায়। তার আগে আইন ছিল, দোষী সাব্যস্ত সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্যদের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা আসন ধরে রাখার অনুমতি পাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত পাবেন, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টে ব্যাক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে।

তৎকালীন ক্ষমতাসীন মনমোহন সিংয়ের সরকার সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কিন্তু, সেই সময় অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসে রাহুল সমর্থকরাও এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল। যার জেরে মনমোহন সরকার সেই অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্সটি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। সেই অধ্যাদেশ আজ রাহুলের কাছেই বুমেরাং হলো।

এ বিষয়ে বিজেপি এবং বামপন্থী-সহ তৎকালীন বিরোধীরা এই অর্ডিন্যান্স নিয়েও মনমোহন সিং এর সরকার এবং কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের এই অর্ডিন্যান্স পাস হওয়ার কয়েকদিন পরে, ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাহুল গান্ধী দিল্লিতে দলের এক সাংবাদিক বৈঠকও করেছিলেন। আজ এত বছর পরে সেই যুগান্তকারী রায়ের কারণেই সাংসদ পদ হারালেন রাহুল গান্ধী। এবার তিনি এবং তার কংগ্রেস কী করে, সেটিই এখন দেখার।
 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/পল্লব-১