জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ (জেসিপিএসসি) এ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
শনিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিষ্ঠানের অডিটোরিয়ামে মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মো. কুদ্দুসুর রহমান, পিএসসি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী, ডেপুটি কমান্ডার মো. আকরাম আলী, উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, আইবার উপ পরিচালক, শিক্ষকমণ্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ অধ্যক্ষ, শিক্ষক, ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী যিষ্ণু মৃধা জিসান ও ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া তাবাসসুম। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তৌফিক আল মাদানী, দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সহকারী শিক্ষক ইমদাদুল হক জুবায়ের।
রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নূরুল আসহাব খান এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ১১শ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিহা আফরোজ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ তার বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান তুলে ধরে বলেন, “২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতন চূড়ান্ত বর্বরমূর্তি ধারণ করেছিল। পাকবাহিনীর অবিরাম গুলির শব্দে সেদিন রাতের নির্জনতা খানখান হয়ে যায়। রাস্তার মোড়ে, অলিতে-গলিতে, ডাস্টবিনে, মাঠে-ঘাটে, বন্দরে জমা হতে থাকে লাশের পর লাশ। এমন পাশবিকতা ইতিহাসে বিরল। কিন্তু হায়নারা বাঙ্গালিদের দমিয়ে রাখতে পারেনি।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধাগণ সিংহ নিনাদে তাঁদের আত্মরিকতা ও হৃদ্যতায় স্বাধীন, সার্বভৌম প্রিয় মাতৃভূমি লাল-সবুজের পতাকা আমাদের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন। এটা তাঁদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য মহা আমানতস্বরূপ। আমাদের কোনো অশুভ কর্মের বিষবাষ্পে যেন তাঁদের আমানতের খেয়ানত না হয়। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার, তোমাদের নক্ষত্র শোভিত জ্ঞানের আলোয় বিকশিত হোক আমাদের প্রিয় স্বদেশ ভূমি।”
অতিথিবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশের স্বাধীনতা রক্ষায়, কর্মে ও চিন্তায় দেশের প্রহরীরূপে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নৈতিকতাসম্পন্ন, মানবিক গুণে সৃষ্টিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।”
প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ আমন্ত্রিত অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জ্ঞাপন, সম্মাননা ক্রেস্ট এবং শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান অর্নি ও আব্দুল কাইয়ুম মহছিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র শিক্ষক মো. মুজাম্মিল হোসেন, সদস্য হিসেবে ছিলেন শিক্ষকবৃন্দ এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপাধ্যক্ষ।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-০৪