মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেছেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিশ্বের মুক্তিকামী জণগণের জন্য অনুপ্রেরণা। আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা সারা বিশ্বে বুকে এক বিষ্ময়েয় জন্ম দিয়েছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সাধারণ অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে নিখাদ দেশপ্রেম, অসীম সাহস ও অসাধারণ মনোবল দিয়ে বিশ্বের একটি ক্ষমতাধর ও প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে। বিশ্বের অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, শক্তি ও ব্যক্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ তখন মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু এটি ছিল বাঙালির ন্যায্য লড়াই। পাকিস্তানের আগ্রাসন ও এদেশের রাজাকার আল-বদর আল-শামসসহ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির নির্যাতন ও নিপীড়ন নির্মমতার সীমা ছাড়িয়েছিল। যা বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে নাড়া দেয়।”
 

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক আরও বলেন, “আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভূমিকা ও জাতি, ধর্ম, বর্ণ, পেশা, সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষের অংশগ্রহণ ছিল বিশ্বের ইতিহাসে এক অসামান্য ঘটনা। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশে থাকা অনেক জাতিগোষ্টীর লোকজন অংশ নিয়েছেন। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। অনেক বিদেশী নাগরিক আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। স্বাধীনতার ৫২ বছরে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়নসহ অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থনৈতিক সাম্য অর্জিত হয়নি। দুর্নীতির বিষবাষ্পে সাধারণ নাগরিকদের জীবন আজ দূর্বিসহ। অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি দূর না করতে পারলে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন।”


রবিবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপর্যুক্ত কথাগুলো বলেন।

সকাল সাড়ে দশটায় প্রফেসর এম. হাবিবুর রহমান হলে ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সুরেশ রঞ্জন বসাকের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রার তারেক ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন, মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কানাডা প্রবাসী তাজুল মোহাম্মদ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দেবাশীষ রায়।
 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর  ড. মো. নজরুল হক চৌধুরী, আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন সহযোগী অধ্যাপক শেখ আশরাফুর রহমান, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী এম. মোকাম্মেল ওয়াহিদ, প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিহিরকান্তি চৌধুরী প্রমূখ।


মুখ্য আলোচক তাজুল মোহাম্মদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। তাঁর জন্ম না হলে এ দেশের স্বাধীনতা সম্ভবপর ছিল না। নয় মাস যঙদ্ধ করে আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা, নির্যাতিত ব্যক্তির অশ্রুজলের বেদনা, বীরাঙ্গনার হাহাকার, গণকবর ও বধ্যভূমির কথা ভুলবার নয়। প্রকৃত ইতিহাস চর্চা ও রহস্য উদঘাটন আমাদের নতুন প্রজন্মের দৃষ্টির জানালা খুলে দিতে পারে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করলে আমরা তাঁদের প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন করতে পারব। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বঙ্গবন্ধু সম্বন্ধে জানতে হবে এবং দেশের প্রান্তে কাজ করতে হবে।”

প্রধান অতিথি মুখ্য আলোচক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক তাজুল মোহাম্মদকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন। এছাড়া সকাল নয়টায় সিলেট শহরের চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক এর নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
 

সকাল সোয়া ১০টায় বটেশ্বরস্ত স্থায়ী ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা ও ইউনিভার্সিটির পতাকা উত্তোলন করেন যথাক্রমে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন।

পরে ভাইস চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ পর্ব পরিচালনা করে ইউনিভার্সিটির রোভার স্কাউটস দল।


 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-১৪