সিলেট মহানগরের শাহজালাল উপশহরে ৫ তলা একটি বাসার পুরোটাই ভোগদখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক বৃদ্ধার বিরুদ্ধে। স্মামী মারা যাওয়ার পর বাসাটির দেবরদের অংশও ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শাহজালাল উপশহরের ডি ব্লকের ১৪ নং রোডের ২৬ নং বাসার বাসিন্দা মরহুম মোবারক আলীর ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবুল কালাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন- ‘মোবারক মঞ্জিল’ নামের ২৬ নং বাসাটির মূল মালিক আবুল কালামের বাবা মরহুম মোবারক আলী। তিনি মারা গেলে পৈত্রিক সূত্রে তারা ৮ ভাই-বোন এই বাসার বর্তমান মালিক। এর মধ্যে কালামের বড় ভাই আব্দুল হাই সাজ্জাদ ২০১৭ সালে মারা গেলে তার অংশ ভোগদখল করে আসছেন তার স্ত্রী নেহারুন বিবি ও সন্তানেরা।
কিন্তু ২০২১ সালের জুন মাসে অন্য মালিকরা বিদেশে থাকার সুযোগে তাদের অজান্তে নেহারুন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা লালাবাজার এলাকার শাহ সিকন্দর (মীরবাড়ি) গ্রামের মরহুম মৌলভী মো. রফিক উল্লাহ’র ছেলে শামীম ইকবালকে মৌখিক চুক্তিতে বাসাটির নিচতলা, দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ ও পঞ্চম তলা ভাড়া দিয়ে দেন। শামীম ইকবাল ভাড়া নিয়ে বাসাটির নিচতলায় ‘বাংলাদেশ অটিজম গবেষণা ও প্রতিবন্ধী স্কুল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন এবং দ্বিতীয় তলার কক্ষ ও পঞ্চম তলায় তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকতে দেন। এমতবাস্থায় আমরা বাসার অন্যান্য মালিক বিষয়টি জানতে পারি এবং এ বিষয়ে নেহারুনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হলে নেহারুনকে ভাড়া না দিয়ে শামীম আদালতের মাধ্যমে সবার ভাড়া পরিশোধ করছেন।
এদিকে, গত ২৭ ও ২৮ মার্চ বিভিন্ন অনলাইন এবং প্রিন্ট সংবাদমাধ্যমে নেহারুনের পক্ষ থেকে একটি একটি সংবাদ সম্মেলনের খবর দেখতে পান প্রবাসী আবুল কালাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারের এই পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন কালাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন- ‘নেহারুন সংবাদ সম্মেলন করে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলতঃ বাসার অন্যান্য মালিক আমরা জীবিত ৭ ভাই-বোন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করার সুযোগে আমার ভাবি নেহারুন বিবি শামীমের কাছে ‘একাই মালিক’ দাবি করে আমাদের অংশও ভাড়া দিয়ে দেন এবং অবৈধভাবে শামীমের কাছ থেকে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ভাড়া আদায় করে ভোগ করেন। পরবর্তীতে সব জেনে আমি আদালতের দ্বারস্থ হই এবং বর্তমানে আদালতের মাধ্যমেই ভাড়াটে শামীমের কাছ থেকে আমরা ভাড়া পাচ্ছি। পাশাপাশি আমি আমার বাকি ভাই-বোনের সম্মতিক্রমে ভাড়াটে শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন চুক্তিপত্র সম্পাদন করি। এতেই মূলতঃ ক্ষুব্ধ হয়ে শামীমের বিরুদ্ধে নেহারুন সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছেন। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নেহারুন আসলে ওই বাসার পুরো মালিক বলে প্রচার করতে চেয়েছেন।’
আবুল কালাম সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, নতুন চুক্তিপত্র করার সময় ভাড়াটে শামীম তার কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- তিনি বাসা ভাড়া দেওয়ার সময় নেহারুনকে সিকিউরিটি বাবদ ১০ লাখ টাকা নগদ প্রদান করেছেন। এই টাকা দেওয়ার সময় নেহারুনের আপন ভাই মোক্তার উল্লাহসহ কয়েকজন সাক্ষীও উপস্থিত ছিলেন। ওইসময় শামীম ইকবাল লিখিত চুক্তিপত্রের বিষয়টি উত্থাপন করলে নেহারুন ‘পরে করবো’ বলে এড়িয়ে যান। সিকিউরিটির ১০ লাখ টাকা ছাড়াও নেহারুনের আবদারে শামীম বাসায় ৯ লাখ ১৯ হাজার টাকর সংস্কার কাজ করিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী আবুল কালাম এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম