একদিকে জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আর অন্যদিকে লঙ্গরখানায় চলে রান্নার আয়োজন। স্বেচ্ছাসেবকরা আগত মানুষদের এক স্থানে বসান সারি সারি করে। আগত সব মানুষকে বলা হয় মুসাফির।
এই মুসাফিরদের তালিকায় আছেন শ্রমজীবী, ভবঘুরে, ফকির, মাজারভক্তসহ অনেকে। নির্দিষ্ট সময়ে স্বেচ্ছাসেবকরা ভুনা খিচুড়ি, ছোলা, খেজুর জিলাপি পিঁয়াজু একটি প্লেটে নিয়ে সবার মধ্যে বিতরণ করেন। মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে সবাই ইফতার শুরু করেন। রমযান মাসে ইফতারের আগ মুহূর্তে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) মাজারের চিত্র এটি।
মাজারে মুসাফিরদের সাহরি ও ইফতার করানোর ঐতিহ্য প্রায় ৭০০ বছরের। গত দুই বছর করোনার কারণে বন্ধ ছিল এই আয়োজন। তবে করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় চলতি বছরে অতীতের মতো এবারো আয়োজন করা হয়েছে সাহরি ও ইফতারের। এতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মানুষ।
মাজার সূত্রে জানা গেছে, মুসাি ফরদের জন্য খাবার তৈরিতে ২৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন। সাহরিতে খাওয়ানো হয় ভাত, তরকারি অথবা খিচুড়ি। ইফতারে খাওয়ানো হয় ভুনা।
সুনামগঞ্জ থেকে শাহজালালের মাজারে এসেছেন কলেজ শিক্ষার্থী রাফাত। তিনি বলেন, “আমরা চারজন এসেছি সুনামগঞ্জ থেকে। মাজারে তো প্রায়ই আসি। তবে এবার প্রথম ইফতার করলাম। খুব ভলো ছিল ।'
রমজান মাসে খুলনা থেকে মাজার জিয়ারতে এসেছেন আব্দুল করিম নামের এক সরকারি কর্মকতা। তিনি বলেন, 'তিন দিনের জন্য সিলেটে এসেছি। আজ মাজারে ইফতার করলাম। মনে অন্যরকম একটা প্রশান্তি পেলাম।'
হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার সেক্রেটারি শাহজালাল মাজারের ৭০০ বছরের ঐতিহ্য খিচুড়ি, ছোলা, খেজুর, জিলাপি ও পিঁয়াজু। সাহরির চেয়ে ইফতারের সময় মানুষ বেশি থাকেন। নারী ও পুরুষের জন্য বসায় আলাদা জায়গা রয়েছে। মাজারের পাশেই লঙ্গরখানায় চলে খাবার তৈরির কাজ। নিচতলায় নারী মুসাফিরদের জন্য ও দ্বিতীয় তলায় পুরুষ মুসাফিরদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
সামুন মাহমুদ খান বলনে, ‘হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে প্রায় ৭০০ বছরের ঐতিহ্য রমজান মাসে মুসাফিরদের ইফতার করানো। প্রতিদিন ২০০-৩০০ মানুষ মাজারে ইফতার করনে। প্রথম চার পাঁচ রোজা পর্যন্ত মানুষজন একটু কম আসেন। তবে এরপর থেকে মুসাফিরদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।'
সিলেটভিউ২৪ডটকম / মাহি /এসডি-০৩