কথায় বলে, মেয়েদের নাকি কৈ মাছের প্রাণ। এই প্রবাদ চলে আসছে বহুযুগ ধরেই। তবে এর সত্যতা নিয়ে ছিল সংশয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় মিলল এই তথ্যের সত্যতা। জানা গেল, শারীরিক কসরত বেশি পারলেও পুরুষের গড় আয়ু নারীদের চেয়ে কম নেয়।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল কলেজের এক দল বিজ্ঞানী তাদের গবেষণাপত্রে এমন তথ্যই তুলে ধরেছেন। এর পেছনে বেশ কিছু যুক্তিও দাঁড় করিয়েছেন তারা। চলুন জেনে নিই সেগুলো কী-
জিনতত্ত্ব
গবেষকদের মতে, জিনগত কারণে একেবারে ভ্রূণ অবস্থা থেকেই এমন বিভাজন তৈরি হয়। যদিও দুটি ভ্রূণের ক্ষেত্রেই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের উপস্থিতি থাকে। কিন্তু গবেষণা অনুযায়ী, ২২ জোড়া ক্রোমোজোম একরকম হলেও শেষ একটি জোড়া কিন্তু আলাদা। ছেলেদের ক্ষেত্রে যা ‘XY’ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ‘XX’।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই ‘Y’ ক্রোমোজমটিই আসলে বিভিন্ন রোগের ধারক এবং বাহক। তাই পুরুষদের রোগভোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।
হরমোন
পুরুষদের দেহে থাকা টেস্টোস্টেরন হরমোনটি দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের পেশিতে এসে জমা হতে থাকে। এটি বয়সকালে হার্টের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অন্যদিকে, নারীদের দেহে থাকা ইস্ট্রোজেন হরমোনটি হার্টের জন্য মহৌষধের মতো কাজ করে। একারণে নারীদের হার্ট সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।
জননতন্ত্র
বয়সের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষদের জননেন্দ্রিয়ও অনেকাংশে দায়ী। পুরুষদের শরীরে থাকা প্রস্টেট গ্ল্যান্ডটি নানা ধরনের রোগের জন্ম দেয়। নারীদের স্তন, জরায়ুও পুরোপুরি সুরক্ষিত নয়। কিন্তু সমীক্ষা অনুযায়ী, এক্ষেত্রে পুরুষদের জননেন্দ্রিয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
বিপাকহার
নারীদের দীর্ঘায়ু লাভের অন্যতম একটি কারণ হলো বিপাকহার। গঠনগত কারণেই নারীদের শরীরে ‘ভালো’ কোলেস্টরলের পরিমাণ পুরুষদের তুলনায় বেশি থাকে। এটি হার্ট ভালো রাখার জন্য অনেক অংশে দায়ী। একটা বয়সের পর ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, নারীদের শরীরে মেদ জমতে দেখা যায়। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত স্থূলত্ব নিয়ে মেয়েদের তেমন সমস্যা হয় না। এর প্রভাব পড়ে বিপাকহারের ওপর।
সামাজিক কারণ
পুরুষরা একসঙ্গে অনেকটা ভার বহন করতে পারলেও, নারীরা সারাদিন ঘর ও বাইরে নানা ধরনের কাজ করেন। তাই শারীরিক কসরত তাদেরই বেশি হয়। এছাড়াও নারীদের শরীর সন্তানধারণের জন্য উপযুক্ত, তাই পুরুষদের তুলনায় নারীরা অনেক বেশি কষ্টসহিষ্ণু।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/সামা
সূত্র : ঢাকা মেইল