মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কাপনাপাহাড় চা বাগান থেকে মদের দোকান (পাট্টা) উচ্ছেদের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চা বাগান নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে’র নিকট তার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আবেদনকারীরা বলেন, উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের কাপনাপাহাড় চা বাগানে ৮/১০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। চা শ্রমিক পরিবারের অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে লেখাপড়া করেন। বাগানে শ্রমিক কলোণীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে একটি দেশীয় মদের দোকান (পাট্টা) রয়েছে। যদিও চা বাগানের অনেক লোক এখন মদ পান করে না। বহিরাগত লোকজন এখানে এসে মদ পান করে রাস্তায় মাতলামি করে থাকে। সঙ্গদোষে বাগানের কিছু উদীয়মান তরুণ মাদকের দিকে ঝুঁকছে। দিনে ও রাতে তাদের উৎপাতে বাগানবাসী অতিষ্ট। মাতালদের হাল্লা চিৎকারে সন্ধ্যার পর বাসায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। মাতালরা রাস্তায় মাতলামি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে পরিবেশ নষ্ট করছে। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলে প্রায়ই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে, মারামারির ঘটনাও ঘটে। বহিরাগত লোকজন এখানে শুধু মদ পান নয় গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অসামাজিক কাজেও জড়ায়। মদের টাকার জন্য অনেকে খারাপ কাজে জড়িত হয়। এলাকায় চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। এতে করে শ্রমিকদের মধ্যে মারাত্বক আকারে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মাদকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছেন। ‘মাদকমুক্ত ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে আমরা বাগানবাসীও অংশীদার। আমাদের ঘাম ঝরানো অর্থে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। কিন্তু আদিম কায়দায় আমাদের মাদকে নিমজ্জিত রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধংস করার চক্রান্ত আমরা হতে দেব না। বাগানবাসী এখন শিক্ষার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সচেতন বাগানবাসীর আন্দোলনের ফলে বিভিন্ন বাগানে মদের দোকান (পাট্টা) ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তারই অংশ হিসেবে কাপনাপাহাড় চা বাগানের মদের দোকান (পাট্টা) চিরতরে বন্ধ করতে হবে। সর্বনাশা নেশার করাল গ্রাস থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার্থে আমরা প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে ধাবিত হবো।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রতন কুমার অধিকারী উপস্থিত ছিলেন।
বাগানবাসীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বাগান পঞ্চায়েত সহ-সভাপতি অজন্তী রানী বাউরী, ইউপি সদস্য ধীরেন বোনার্জী, বাগান মুরব্বী কিরণ বোনার্জী, দিগেন্দ্র চাষা, বিশ্বময় চাষা, ছাত্র-যুবকদের পক্ষে কিশোর বোনার্জী, তপন বোনার্জী, গণেশ বোনার্জী, ম্বপন চাষা, অসীম পট্টনায়ক, সুনীল বোনার্জী প্রমুখ।
জানতে চাইলে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন- বাগানবাসীর দাবিটি যৌতিক। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/মঞ্জুরে/এসডি-১০