উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন আদেশে শিগগিরই কারামুক্ত হচ্ছেন আলোচিত হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক।
মামুনুল হক এক মামলায় জামিন পেয়েছেন। সাত মামলার জামিন শুনানি শেষ হয়েছে। এখন শুধু আদেশের জন্য অপেক্ষা। খুব শিগগিরই জামিনে মুক্ত হবেন-এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তার আইনজীবীর।
এদিকে, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘কারাবন্দি হেফাজত নেতাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে। তারা যে তালিকা দিয়েছে সে অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সেই তালিকার অধিকাংশ নেতাকে ইতোমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’ মন্ত্রীর এমন বক্তব্যেও পরিষ্কার যে শিগগিরই তারা কারামুক্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও সহিংসতার পর বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় আসেন। এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরেরও বিরোধিতা করেন তিনি। এ নিয়ে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
দুদকের জালে হেফাজতের যেসব নেতা
এসব ঘটনায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিন ডজন মামলা হয়। একই বছরের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার একটি রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। একপর্যায়ে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেন হেফাজতের কর্মীরা। ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রয়েল রিসোর্টকাণ্ডের ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে মামুনুল হক হাইকোর্ট থেকে একাধিক মামলায় জামিন পেয়েছেন। ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায়ও তিনি জামিন আবেদন করেছেন। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও সাত মামলায় জামিন শুনানি শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে মামুনুল হকের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, সম্প্রতি বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাত মামলার জামিন শুনানি শেষ হয়েছে। ঈদের পর কোর্ট খুললে আদালত জামিন বিষয়ে আদেশ দেবেন। আমরা শুনানিতে তাকে জামিন দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছি। জামিন দেওয়ার বিষয়ে আদালতের মনোভাবও ইতিবাচক মনে হয়েছে। আশা করছি ঈদের পর মামুনুল হক জামিন পাবেন।
এদিকে, গত ১৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘কারাবন্দি হেফাজত নেতাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে। তারা যে তালিকা দিয়েছে সে অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।’ চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিদর্শনকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে আরও বলেন, ‘হেফাজতের পক্ষ থেকে আমাদের কারাবন্দি নেতাদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকার অধিকাংশ নেতাকে ইতোমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
সিলেটভিউ২৪.কম/মাহি-১১