ব্যাপারটা বেশ অনুমিতই ছিল, টিকছে না সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল ও তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদের সংসার। কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেছিল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সেই ঘটনা। যদিও দীর্ঘ দিন ধরে আলাদাই থাকছেন তারা। এর মধ্যে নোবেলকে মাদক ছেড়ে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছিলেন সালসাবিল। কিন্তু তা আর না হওয়াতে, অবশেষে নোবেলকে অফিসিয়ালি ডিভোর্স দিলেন তিনি।
 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা করেন সালসাবিল। সঙ্গে বিভিন্ন জনের দিকে অভিযোগের আঙুলও তোলেন।
 


তিনি লেখেন, ‘আমি হয়তো বা আগে ক্লিয়ার করিনি, ব্যাপারটা যেহেতু আমরা দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিভোর্স রেজিষ্ট্রেশনটা উকিলকে বলে হোল্ডে রেখেছিলাম।’

নোবেলকে সুযোগ দিলেও ফিরে আসেনি জানিয়ে সালসাবিল আরও লেখেন, “সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার পরও যখন আমার ও নোবেলের কথা হয় আমি তাকে শেষবারের মতো মাদকদ্রব্য ছাড়ার কথা এবং চিকিৎসা নেওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করি। সে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয়, কখনো মাদক ছাড়বে না এবং বলে, ‘নেশা ছাড়লে তো আগেই ছাড়তাম লল।’ এরপর আমি আমার পারিবারিক সিদ্ধান্তে আমার ডিভোর্স রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করি।”
 

প্রাক্তনকে শুভকামনা জানিয়ে অভিযোগের আঙুল তোলেন ক্ষমতাশালীদের দিকে। তার লেখায়, ‘আমার প্রাক্তনকে আমি শুভকামনা জানাই । নোবেল কখনোই এত অসুস্থ ছিলো না। এমন না যে নোবেলের আজকের এই অবস্থার জন্য ও শুধু একা দায়ী। অবশ্যই সে নিজেই সবচেয়ে বেশি দায়ী কিন্তু তার মাদকদ্রব্য প্রাপ্তি ও আসক্তির ক্ষেত্রে অনেক ক্ষমতাশালী মানুষদের অবদান আছে। সরকারি প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী; (দরকার হলে নাম বলব)। যাদের আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড আপনারা নিউজে দেখেছেন অথবা এখনো দেখেননি। কিন্তু নোবেলের আশে পাশে তাদের অবশ্যই দেখেছেন এবং দেখে থাকবেন (তাদের মধ্যে কিছু শো অরগানাইজারও)।’
 

কীভাবে মাদক আসে এবং এর পরিচালন পদ্ধতি নিয়েও মুখ খোলেন সালসাবিল। নোবেলের প্রাক্তন লেখেন, ‘বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য ব্যবসায় তারা সচল এবং কিছু এয়ার হোস্টেসদের (একজন এয়ারহোস্টেস যে অন্য এয়ারহোস্টেসদের পরিচালনা করে এবং ডিস্ট্রিবিউশন সুবিধার্থে পরিচিত মুখ/ভিক্টিম খুঁজে বের করে) মাধ্যমে এবং অন্যান্য পন্থায় তারা দেশে মাদক আমদানি করে এবং গোপনভাবে ডিস্ট্রিবিউশন করে। যার একজন ভিক্টিম নোবেল নিজেই, আসলে শুধু ভিক্টিম বললে ভুল হবে এখন জড়িত।

সবশেষ তিনি লেখেন, ‘মিডিয়ার বিষয় তাই শুধু সামনে এসেছে। কিন্তু এসব ক্ষমতাধারী সিন্ডিকেটের ব্যবসার মুনাফাই আসে বিভিন্ন পরিবারের সন্তানদের ও যুবসমাজকে মাদকাসক্ত করিয়ে।’
 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদকে বিয়ে করেন মাইনুল আহসান নোবেল। ভারতীয় টিভি চ্যানেল জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ শোয়ের মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। তার দরাজ কণ্ঠের গায়কী মুগ্ধ করে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের। কিন্তু সেই মুগ্ধতা ধরে রাখতে পারেননি নোবেল। বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করে এবং উদ্ভট সব কাণ্ড ঘটিয়ে কেবল নিন্দাই কুড়িয়েছেন তিনি।


 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-৬৪