শীর্ষ আদালতের আদেশে আপাতত মুক্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে শুক্রবার (১২ মে) তাকে রাজধানী ইসলামাবাদের হাইকোর্টে হাজিরা দিতে হবে। ইমরানের এই হাজিরা উপলক্ষে কর্মী-সমর্থকদের রাজধানীতে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
আর তাদের রুখতে রাজধানী শহরে জরুরি আদেশ জারি করেছে পুলিশ। আর এর জেরে ইমরান খানের শুনানিকে ঘিরে ইসলামাবাদে বিরাজ করছে উত্তাপ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শুনানিকে ঘিরে শুক্রবার ইমরান খানের সমর্থকরা রাজধানীতে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর তাদের রুখতে পাকিস্তান পুলিশ রাজধানীতে জরুরি আদেশ জারি করেছে।
দুর্নীতির মামলায় গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। তার সেই গ্রেপ্তার পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং এরই একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ এবং বেআইনি বলে রায় দেয়।
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) শুনানির সময় সারা দেশ থেকে হাজার হাজার ‘শান্তিপ্রিয় পাকিস্তানি’ তাদের নেতার সাথে সংহতি জানিয়ে ইসলামাবাদে জড়ো হবে।
বিশ্বকাপজয়ী তারকা ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনের শুনানির জন্য শুক্রবার বেলা ১১ টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির হবেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ওয়ারেন্টে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স তাকে গ্রেপ্তার করে।
পাকিস্তানের দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার এই পদক্ষেপে দেশজুড়ে সেদিনই সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেহবাজ শরিফের সরকার খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং ইসলামাবাদসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে ডাকতে বাধ্য হয়।
এদিকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরে কমপক্ষে আটজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভ দমাতে পাকিস্তানের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণগ্রেপ্তার শুরু করে এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় দুই হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া বিক্ষোভ চলাকালীন ইমরান খানের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় সামরিক স্থাপনায় হামলা এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ভবন ও সম্পদ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এমনকি পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাওয়ালপিন্ডিতে দেশটির সেনা সদরদপ্তরে হামলা এবং লাহোরে সেনাবাহিনীর কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
পরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইমরান খানের সমর্থকদের সতর্ক করে জানায়, তার সম্পদের ওপর আরও হামলা হলে তারা দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
বুধবার সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সামরিক স্থাপনায় সহিংসতা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’ এবং এর পেছনে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/ইআ-০৭