হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির অভিযোগে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনাটি ঘটে।


জানা যায়, মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির অভিযোগে আটকের পর সেই নারীকে ‘মহিলা চোর’ সংবলিত একটি লেখা তার হাতে দিয়ে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। পরে আবার সেই ভিডিও চিত্র এবং ছবি ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাধবপুর’এর অফিসিয়াল আইডিতে আপলোড করা হয়। ছবিটি আপলোড করার পর থেকেই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। নারী নেত্রীসহ অনেকেই এ ঘটনাটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অবিহিত করছেন।



নারী নেত্রীরা বলছেন, কেউ যদি অপরাধ করে তা হলে তার সাজা হতে পারে। মানবাধিকার লঙ্ঘণের কোন সুযোগ নেই।


ছবিতে দেখা যায়, বড় করে লেখা হয়েছে ‘মহিলা চোর’। তার ঠিকানা দেয়া রয়েছে বি-বাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার চান্দুরা গ্রামে। তার নাম আল্পনা বেগম। গত (৯ মে মঙ্গলবার) ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাধবপুর’ নামক আইডিটি থেকে এটি আপলোড করা হয়। আপলোড করা ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত নারী পুরুষদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। তিনি বার বার আল্লাহ আল্লাহ ডাকছেন এবং কয়েকজন পুরুষ তাকে গালিগালাজ করছে এবং বিভিন্নভাবে হেনস্তা করছে। এছাড়াও ওই নারীকে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদতেও দেখা গেছে ছবিতে। আপলোড হওয়ার ছবির কমেন্টে জুলহাস উদ্দিন রিংকু নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন ‘উনি কি কোন প্রকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে...?। কানিজ জেবিন জেবা নামে একটি আইডি থেকে লেখা হয়েছে ‘আসলে ই কি সে চোর ?।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. এএইচ এম ইশতিয়াক মামুন জানান, ওই নারীকে চেইন চুরির অভিযোগে আটক করে জনতা। পরে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতেই ‘মহিলা চোর’ লিখে ছবি দিয়ে আমাদের আইডিতে ছাড়া হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।


তিনি বলেন, তাকে হাতে নাতে আটক করা হয়েছে তাই চোর প্রমানের আর কিছু নেই। একজন চোরের ছবি যদি না দেয়ায় তা হলে আর কি দেয়া যাবে।


পুরুষের মাধ্যমে হেনস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চোর ধরা পড়লে যেমনটা হয় এমনটা হয়েছে।


নারী নেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী তাহমিনা বেগম গিনি বলেন, একজন মহিলা চুরি করলে তার বিচার হবে। কিন্তু একজন মহিলা চুরি বা ডাকাতি করলেও তাকে পুরুষরা হেনস্তা করতে পারবে না। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।


এ বিষয়ে মাধবপুর থানার (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ওই নারীকে থানায় সোপর্দ করার পর কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেইনি। তাই তাকে সন্দেহভাজন ঘুরাঘুরি করার অভিযোগে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/জাকির/এসডি/ইআ-১২