সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন পাঁচ জন। এর মধ্যে তিনজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। আগেভাগে মনোনয়ন কিনলেও প্রচারণার মাঠে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ভোটারদের গতিবিধি ও নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণেই সময় পার করছেন তারা। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। আর এখনো মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করলেও মাঠে সরব রয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুল।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের হিসেব নিকেষ যেন আটকে আছে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি-না আগামী ২০ মে সমাবেশ করে সেই সিদ্ধান্ত জানানোর কথা আরিফের। মাঝে মধ্যে সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি তার অবস্থান নিয়ে ধূ¤্রজাল সৃষ্টি করছেন। কখনো বলছেন নির্বাচন বর্জনে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা, আবার কখনো ইঙ্গিত দিচ্ছেন প্রার্থী হওয়ার। সবমিলিয়ে সকল প্রার্থীই এখন চেয়ে আছেন আরিফের সিদ্ধান্তের দিকে।
সিসিক নির্বাচনে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল হানিফ কুটু, ব্যবসায়ী সামছুন নূর তালুকদার ও আবদুল মান্নান খান। এর মধ্যে নির্বাচনী মাঠে সবচেয়ে বেশি সরব রয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিনই এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন আনোয়ার। সংগঠনের সভাপতি শামীমা নাছরিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় তিনি আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকে সিলেটের নার্সদের আস্থা রাখার আহŸান জানান।
এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানও মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার তিনি নগরীর ৮নং, ৯নং ও ৩৮নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এসময় তার সাথে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থী হিসেবে নজরুল ইসলাম বাবুলকে মনোনয়ন প্রদান করেছে। কিন্তু প্রচারণায় এখনো তিনি আনোয়ার ও মাহমুদুলের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বাবুলও নগরীর কয়েকটি স্থানে গণসংযোগ করেছেন।
এদিকে, দলীয় প্রার্থীরা প্রচারণায় সরব থাকলেও এখনো মাঠে নামতে দেখা যায়নি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে সিলেট সরকারি এমসি কলেজ ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আবদুল হানিফ কুটু রয়েছেন আলোচনায়। দলীয় প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের বিপরীতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তিনি আলোচনায় আসেন। কিন্তু এখনো তিনি প্রচারণায় নামেননি।
আবদুল হানিফ কুটু জানান, গতকাল শুক্রবার তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেছেন। দু’একদিনের মধ্যে তিনি প্রচারণায় নামবেন বলে জানান। দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে কুটু বলেন, ‘আমি মনেকরি প্রার্থী নির্বাচনে দল ভুল করেছে। এজন্যই আমি প্রার্থী হয়েছি। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা এখন প্রার্থী ও নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সময়মতো তারা আমাদেরকেই মোড় নিবেন।’
সিলেটভিউ২৪ডটকম/শাদিআচৌ